Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 4:14 pm

কোন ফলে কোন সুফল

ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বজায় থাকলে নিজেকে নতুনরূপে উপস্থাপন করা যায়। তাই অনেকে ত্বক ও চুলের সৌন্দর্যের জন্য কতই না প্রসাধনী ব্যবহার করেন। এতে যে সৌন্দর্য ফুটে ওঠে তা ক্ষণস্থায়ী। তারুণ্য ধরে রাখতে চিকিৎসকরা ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন। শুধু ত্বক ও চুলের সৌন্দর্যের জন্যই নয়, শরীরকে সুস্থ ও ভালো রাখতেও খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন ফল রাখা উচিত।

আমড়া
আমাদের দেশে আমড়া খুবই জনপ্রিয় একটি ফল। এটি যেমন দামে সস্তা, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরা। চিকিৎসকদের মতে, জীবনে সুস্থ থাকার অন্যতম টোটকা হচ্ছে আমড়া। ত্বক ও চুলের সুস্থতায়ও জুড়ি নেই টক ফলটির। অ্যানেমিয়ার সমস্যা দূর করতে আমড়ার ভূমিকা রয়েছে। ওজন কমাতে সাহায্য করে। মাড়ি ও দাঁতের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে আমড়া খাওয়া প্রয়োজন। এছাড়া ঠাণ্ডা ও কাশি নিরাময়ে বেশ কাজ করে এটি। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও আমড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

লেবু
ভেষজগুণের অধিকারী লেবু। লেবুতে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। ফলে দেহে ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে খুব সহজে। হাড়ের গঠন ও দৃঢ়তা বজায় থাকে। খুশকির সমস্যা দূর করতে লেবু ওষুধের মতো কাজ করে। লেবুতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় দেহের কোষ ও ত্বককে অকাল বার্ধক্যের হাত থেকে রক্ষা করে। রান্না বা খাবারের সঙ্গে লেবুর ব্যবহার বিজ্ঞানসম্মতভাবে শরীরের পক্ষে উপযোগী। আদিকাল থেকে রূপচর্চায় লেবুর ব্যবহার হচ্ছে। মুখের স্পট বা কোনো কালো দাগ দূর করতে লেবু যথেষ্ট কার্যকর। লেবুর রস দিয়ে ব্রণও দূর করা যায়। মাড়ির সমস্যা দূর করে লেবু।

পেঁপে
পেঁপে এমন একটি ফল যা সারা বছরই পাওয়া যায়। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যাদের পেটে সমস্যা রয়েছে তাদের মূল ওষুধ হচ্ছে পেঁপে। এতে ক্যারোটিনের আধিক্য রয়েছে, কিন্তু ক্যালরির পরিমাণ তুলনামূলক কম। ফলে যাদের মেদের সমস্যা তারা অনায়াসে পেঁপে খেতে পারেন। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে
সাহায্য করে। পাকা পেঁপে কালো দাগ দূর করতে সহায়ক। শীতকালে ত্বকের কোষগুলো মরে যায়, এ সময় পেঁপে খেলে মৃতকোষ দূর হয়। নতুন মায়েদের জন্য পেঁপের তরকারি ভীষণ উপকারী বুকের দুধ বাড়ে।

স্ট্রবেরি
আমাদের দেশে অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে স্ট্রবেরি। চোখ ও ত্বকের যতেœর পাশাপাশি হƒদযন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে স্ট্রবেরির গুরুত্ব অপরিসীম। এতে ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন-বি৫ ও
ভিটামিন-বি৬ রয়েছে, যা চুলের ক্ষয়রোধ করে। এছাড়া স্ট্রবেরিতে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন সি ও ফাইটোকেমিক্যালস। এসব উপাদান মস্তিষ্কের উন্নতিতে সঠিকভাবে কাজ করে। স্ট্রবেরিতে থাকা পটাশিয়াম মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলেও সাহায্য করে।

আমলকী

আমলকীকে সাধারণত ভেষজ ফল বলা হয়। অনেক গুণের একটি ফল। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, অন্যান্য ফলের চেয়ে আমলকীতে বেশি পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। আমলকীর রস নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে, দাঁত শক্ত রাখে। মুখের রুচি ও স্বাদ বাড়াতে এর জুড়ি নেই। কফ, বমি, অনিদ্রা, ব্যথা প্রভৃতি সমস্যার সমাধান করে। আমলকীর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে ত্বকের কালো দাগ দূর হয়ে যায়। চুলের যতেœ এটি বেশ কার্যকর। চুলের সব ধরনের সমস্যা দূর করতে এই ফলটি উপকারী।

টমেটো
টমেটোতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, কে-সহ ফলেট ও পটাশিয়াম। চর্মরোগ থেকে রেহাই পেতে টমেটো অত্যন্ত কার্যকর। ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা দূর করতে এর জুড়ি মেলা ভার। হেপাটাইটিস নিরাময়ে এর ভূমিকা রয়েছে। টমেটোর লাইকোপেন ও ভিটামিন ‘এ’ অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

কলা
নরম ও মিহি হওয়ায় পেটের অনেক সমস্যার সমাধান করে কলা। নিয়মিত খেলে আলসার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘বি’ থাকে, যা স্নায়ুকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। মানসিক চাপ কমাতে বেশ কাজ করে কলা। কলায় থাকা কার্বোহাইড্রেট রক্তের শর্করার মাত্রা ঠিক রেখে স্নায়বিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

কমলা
কমলা সবসময় পাওয়া গেলেও শীতকালে খুব সহজলভ্য। কমলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা ও চুলের সুস্থতায় উপকারী। এর অভাবে মুখে ঘা হলে ওষুধ হিসেবে কমলা খেতে পারেন। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণেও বেশ সাহায্য করে।

চেরি
ক্ষীণবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ও যাদের স্মরণশক্তি কম তাদের জন্য চেরি উপকারী। এ ফলে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রে যে সমস্যা হয়, তা প্রতিরোধ করে।

কামরুন নাহার উষা