লাম্বার স্পনডোলাইসিস: কোমরের পাঁচটি হাড় আছে। এ হাড়গুলো বয়সের কারণে বা বংশগত কারণে ক্ষয় হয়ে গেলে তাকে লাম্বার স্পনডোলাইসিস বলে।
পিএলআইডি: এটি সাধারণত ২৫ থেকে ৪০ বছরের মানুষের ক্ষেত্রে বেশি হয়। মানুষের হাড়ের মধ্যে ফাঁকা জায়গা থাকে। এটি পূরণ থাকে তালের শাঁসের মতো ডিস্ক বা চাকতি দিয়ে। এ ডিস্ক যদি কোনো কারণে বের হয়ে যায়, তখন স্নায়ুমূলের ওপরে চাপ ফেলে। এর ফলে কোমরে ব্যথা হতে পারে। বড় কোনো আঘাতের ইতিহাস থাকলে, কোমরব্যথার পাশাপাশি বুকে ব্যথা হলে, কিংবা রোগীর আগে কখনও যক্ষ্মা হয়ে থাকলেও বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। ক্যানসার, অস্টিওপোরোসিস, এইডস এবং দীর্ঘকাল স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ সেবনের ইতিহাস থাকলে কোমরব্যথাকে অবহেলা করা চলবে না। ব্যথার পাশাপাশি জ্বর, শরীরের ওজন হ্রাস, অরুচি, অতিরিক্ত ঘাম প্রভৃতি উপসর্গ থাকলে এবং ব্যথাটা কোমর ছাড়িয়ে পায়ের দিকে বিশেষ করে এক পায়ের হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ছড়ালে অথবা এক পায়ে তীব্র ব্যথা বা অবশ ভাব হলে সতর্ক হতে হবে। প্রস্রাব বা পায়খানার সমস্যা, মলদ্বারের আশপাশে বোধহীনতা, মেরুদণ্ডে বক্রতা, পায়ের দুর্বলতা বা পায়ের মাংসপেশির শুষ্কতা প্রভৃতি উপসর্গকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। কোমরব্যথার সঙ্গে উল্লিখিত যে কোনো উপসর্গ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লক্ষণ: প্রথম দিকে এ ব্যথা কম থাকে এবং ক্রমান্বয়ে তা বাড়তে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিত হয়ে শুয়ে থাকলে এ ব্যথা কিছুটা কমে আসে। কোমরে সামান্য নড়াচড়া হলেই এ ব্যথা বেড়ে যায়। ব্যথার সঙ্গে পায়ে ব্যথা নামতে বা উঠতে পারে, হাঁটতে গেলে পা খিঁচে আসে বা আটকে যেতে পারে। ব্যথা দুই পায়ে বা যে কোনো এক পায়ে নামতে পারে। কোমরের মাংসপেশি কামড়ানো ও শক্ত ভাব হয়ে যেতে পারে। প্রাত্যহিক কাজ, যেমন নামাজ পড়া, তোলা পানিতে গোসল করা, হাঁটাহাঁটি করা প্রভৃতিতে কোমরের ব্যথা বেড়ে যায়। প্রথমে কোমরে অল্প ব্যথা থাকলেও ধীরে ধীরে ব্যথা বাড়তে থাকে। অনেক সময় হয়তো রোগী হাঁটতেই পারে না। ব্যথা কখনও কখনও কোমর থেকে পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। পায়ে ঝিনঝিন ধরে থাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পা ফেলতে সমস্যা হতে পারে। পা অবশ ও ভারী হয়ে যায়। পায়ের শক্তি কমে যায়। মাংসপেশি মাঝেমধ্যে সংকুচিত হয়ে যায়। [বাকি অংশ আগামীকাল]
ডা. মোহাম্মদ আলী
বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি বিভাগ
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা
