Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:59 pm

কোমরসন্ধি প্রতিস্থাপন কেন

 হিপ রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি বা টোটাল হিপ আর্থোপ্লাস্টিতে রোগাক্রান্ত কোমরসন্ধিকে কৃত্রিম সন্ধি দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়। কৃত্রিম কোমর প্রতিস্থাপনের প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যথা দূর করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোমরসন্ধির স্বাভাবিক চলাফেরা ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা। অস্ত্রোপচার করার আগে চিকিৎসক ব্যথা প্রশমনের জন্য ওষুধ, ব্যায়াম এবং ওয়াকার বা ছড়ি ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন। যদি এতে সমস্যার সমাধান না হলে অস্ত্রোপচার করাই ভালো। কোমরের অস্থিসন্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ভাঙা কোমর, হাড়ের টিউমার, অস্টিওনেক্রোসিস হাড়ের ক্ষয় বা পরিবর্তন যাতে কোমরসন্ধিতে অপর্যাপ্ত রক্তসঞ্চালন ঘটে, এসব ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে। যেসব উপসর্গে কৃত্রিম কোমরসন্ধি প্রতিস্থাপনের কথা ভাবতে হবেÑপ্রচণ্ড ব্যথা, যা রাতেও জাগিয়ে রাখে। ব্যথা উপশমকারী ওষুধ বা হাঁটাহাঁটির জন্য ছড়ি ব্যবহারের পরও ব্যথা না কমা। সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বা নামার ক্ষেত্রে কষ্ট অনুভূত হওয়া। বসা থেকে ওঠার সময়ও ব্যথা পাওয়া। প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্মে, যেমন হাঁটাহাঁটি, বসা, দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ব্যথা অনুভূত হওয়া।

অস্ত্রোপচারে কী কী সমস্যা হতে পারে: কোমরসন্ধি প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার সাধারণত নিরাপদ, তবে অন্যান্য অস্ত্রোপচারের মতো এতেও কিছু কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া প্রতিরোধে অস্ত্রোপচারের পর রক্ত তরল রাখার ওষুধ দেয়া হয়। এছাড়া হাঁটু পর্যন্ত লম্বা ইলাস্টিক মোজা, ব্যায়াম, রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি হ্রাস করে। অস্ত্রোপচারের পর সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিছু কিছু শারীরিক আসন নতুন প্রতিস্থাপিত অস্থিসন্ধি থেকে কৃত্রিম অংশকে ছুটিয়ে দিতে পারে। রোগীর অস্ত্রোপচারের পর কখনো কোমরসন্ধিকে ১০০ ডিগ্রির বেশি বাঁকানো এবং পা দুটোকে শরীরের মাঝামাঝি বরাবর ভাঁজ করা ঠিক নয়।

অস্ত্রোপচারের পরের সতর্কতা: দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই রোগীকে তার স্বাভাবিক গতিবিধি অনুযায়ী ওঠা, বসা, এমনকি ক্রাচের সাহায্যে হাঁটাচলা করার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এসবের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করলে রোগীর কোমরের ক্ষতিগ্রস্ত সংযোগস্থল ও মাংসপেশি দ্রুত সচল হয়ে উঠবে। একজন অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্ট এ ক্ষেত্রে কিছু ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অস্ত্রোপচারের ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর রোগীকে পুনরায় চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন

চিফ কনসালট্যান্ট ও বিভাগীয় প্রধান

ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ঢাকা