‘মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই’

কোম্পানির গৎবাঁধা উত্তরে অতিষ্ঠ বিনিয়োগকারীরা

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: কোনো কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বাড়লে সেই কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির আড়ালে কোনো সংবেদনশীল তথ্য রয়েছে কি না। জবাবে প্রতিটি কোম্পানি থেকেই বলা হয়, ‘তাদের কাছে দর বৃদ্ধি পেতে পারে এমন কোনো তথ্য নেই’। এমন উত্তরে খুশি থাকে স্টক এক্সচেঞ্জ। বিষয়টি এখানে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এ উত্তরে সন্তুষ্ট নয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

বিনিয়োগকারীদের মতে, সব কোম্পানি থেকে যে উত্তর দেয়া হয় তা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আসল ঘটনা আড়াল করে রাখার জন্য কোম্পানি এমন উত্তর দেয়। অনেক সময় সংবেদনশীল তথ্য গোপন করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তারা কৃত্রিমভাবে শেয়ারদর বাড়িয়ে নিয়ে পরে সংবেদনশীল তথ্য দেন।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত দশ দিনে ডিএসই কর্তৃপক্ষকে মূলসংবেদনশীল তথ্য রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাব দিয়েছে ১৮ কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, জুটস স্পিনার্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, সাউথ বাংলা এগ্রিক্যালচার ব্যাংক, সালভো কেমিক্যাল, ঢাকা ডায়িং, জনতা ইন্স্যুরেন্স, ম্যাকসন স্পিনিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, মেঘনা পিইটি, মেঘনা কনডেন্স মিল্ক, রিং শাইন টেক্সটাইল, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, আলনিমা ইয়ার্ন, সাফকো স্পিনিং, শ্যামপুর সুগার, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, স্টাইল ক্রাফট ও এইচআর টেক্সটাইল।

সম্প্রতি ভিন্ন সময়ে এসব কোম্পানিকে অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে নোটিস দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। জবাবে প্রতিটি কোম্পানি থেকে একক উত্তর এসেছে। তা হচ্ছে, ‘আমাদের কাছে শেয়ারদর বৃদ্ধি পেতে পারেÑএমন কোনো সংবেদনশীল তথ্য নেই’। একই ধরনের উত্তর দিয়েছে গত এক মাসে অন্তত অর্ধশতাধিক কোম্পানি।

বিষয়টি জানতে সাফকো স্পিনিংয়ে যোগাযোগ করলে কোম্পানি সচিব ইফতেখার আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, ‘শেয়ারদর কেন বাড়ছে তা আমাদের জানা নেই। আর এটা আমাদের জানার কথাও নয়। বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবছি। এ বিষয়ে ডিএসই কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল। আমরা তাদের জানিয়েছি যে, সংবেদনশীল কোনো তথ্য নেই।’

অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘কোম্পানির উচিত কোনো সংবেদনশীল তথ্য থাকলে তা জানানো। কারণ এমন তথ্য পেলে আমাদের সেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ হিসাবটা সহজ হয়। আমরা বুঝতে পারি শেয়ার ছেড়ে দেব নাকি রেখে দেব। তারা বলেন, অনেক কোম্পানি তথ্য গোপন করে শেয়ারদর বেড়ে গেলে সংবেদনশীল খবরটি সামনে নিয়ে আসেন। এটি যদি নেতিবাচক খবর হয় তাহলে দ্রুতই দর কমতে থাকে। এতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ প্রসঙ্গে মো. আবুল হোসেন নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, কোম্পানিগুলোর গৎবাঁধা উত্তর শুনতে শুনতে আমরা অতিষ্ঠ। বারবার যদি একই ধরনের উত্তর পাওয়া যায় তাহলে কোম্পানির কাছে দর বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে কী লাভ?’

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একজন কর্মকর্তা বলেন, সব কোম্পানি থেকে একই ধরনের উত্তর আসবে তা আমরা আশা করি না কিন্তু নিয়মে যা রয়েছে আমরা তার বাইরে যেতে পারি না। নিয়মে যেমন রয়েছে আমরা তেমনটিই করি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০