শেয়ার বিজ ডেস্ক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অন্য যেকোনো দেশ থেকে ব্রিটেনে ঢুকলেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। এ কারণে অনেক বিদেশি এখন ব্রিটেনে ভ্রমণ করতে আগ্রহ বোধ করছেন না। এতে উড়োজাহাজের যাত্রীও কমে গেছে। সরকারের এ কোয়ারেন্টাইন আইনকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গেছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ইজিজেট ও রায়ানএয়ার। খবর: ইউরো নিউজ।
ব্রিটেনে লকডাউন শিথিল করা হলেও কিছু নিয়মে কড়াকাড়ি আরোপ করা হয়েছে। গত ৮ জুন থেকে ব্রিটেনে আগতদের নির্দিষ্ট ঠিকানা দিয়ে দুই সপ্তাহের জন্য আইসোলেশনে যেতে হয়। এ আইনকে নিজেদের ব্যবসার জন্য বিরাট ক্ষতিকর হিসেবে দেখছে এয়ারলাইনগুলো।
গত শুক্রবার পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তিন উড়োজাহাজ সংস্থা নিষেধাজ্ঞাকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটা ব্রিটেনের পর্যটন ও সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে এবং হাজারো মানুষের চাকরি ধ্বংস করছে।
তিন কোম্পানি ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে নথিপত্র জমা দিয়ে জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন করেছে এবং যতটা দ্রুত সম্ভব শুনানির আহ্বান জানিয়েছে। গ্রুপটি বলছে, ব্রিটেন ও অন্য দেশগুলোর সঙ্গে প্রস্তাবিত ‘এয়ার ব্রিজ’ কখন ও কীভাবে চালু করা হবে, সে ব্যাপারে পরিষ্কার কোনো নির্দেশনা নেই। ‘এয়ার ব্রিজ’ পদ্ধতির অর্থ হলো, দুই দেশের কভিড-১৯ সংক্রমণের মাত্রা যখন কাছাকাছি থাকবে, তখন ওই দুই দেশের নাগরিকদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে আইসোলেশনে থাকার প্রয়োজন পড়বে না।
১০ মার্চ সরকার যে কোয়ারেন্টাইন নীতিমালা দিয়েছিল, তাতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে অতটা কড়াকড়ি ছিল না। তিন উড়োজাহাজ সংস্থা এখন পুরোনো সেই আইনটি আবার বলবৎ করার আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের মতে, এটাই হতে পারে সবচেয়ে ‘বাস্তবসম্মত ও কার্যকর’ সমাধান, যা ব্রিটেনকে ইউরোপের সমান্তরালে নিয়ে আসবে। ১৫ জুন থেকে ইউরোপের অধিকাংশ দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত খুলে দেওয়া হচ্ছে।
২৯০টি উড়োজাহাজ সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (ইয়াটা) এ সপ্তাহে জানিয়েছে, কভিড-১৯ মহামারির কারণে উড়োজাহাজ খাতটি চলতি বছর ৮৪ বিলিয়ন ইউরো ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। ২০২০ সালকে ‘বিমানসেবার ইতিহাসেই সবচেয়ে খারাপ’ বছর হিসেবে অভিহিত করেছে ইয়াটা।
বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় অধিংকাশ সংস্থাই কর্মী ছাঁটাই করছে। এছাড়া বিমান তৈরির কোম্পানিগুলোও কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে, কেননা নতুন বিমানের অর্ডার কমে যাওয়ায় তাদের আয় নেই।
করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চাকরিচ্যুত হচ্ছে এয়ারলাইনগুলোর কর্মীরা। দুই দিন আগে জার্মানির লুফথানসা পূর্ণ সময়ের ২২ হাজার কর্মীকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান এমিরেটস ৬০০ বৈমানিক ও ৭০০ কেবিন ক্রু ছাঁটাই করেছে। গত মাসে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার কথা জানিয়েছে।