Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 2:26 pm

কোয়ারেন্টাইন-আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তি সনাক্ত করবে সিগমাইন্ড’র প্রযুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান সময়ে বিশ্ব জুড়ে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তিগুলো মুখোশ পরিহিত মুখমন্ডল শনাক্তে কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তাই কোয়ারেন্টাইন বা আইসলেশনে থাকা ব্যক্তিরা মুখোশ পড়ে ঘোরাফেরা করলে সার্ভিলেন্স ক্যামেরায় তাদেরকে সনাক্ত করা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে পড়ে।

পরিসংখানে দেখা গেছে, যেসব দেশে শুরু থেকেই মাস্ক ব্যবহারের প্রচলন ছিল, সেসব দেশে সংক্রমনের হার তুলনামুলক অনেক কম। এই সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিগমাইন্ড তাদের ওয়াচক্যাম ম্যাস সাভিলেন্স সিস্টেম এ সংযোজন করেছে মুখোশ উন্মোচন করার প্রযুক্তি যা সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যেগুলো কাজ করতে পারে। সোমবার (৬ এপ্রিল) সিগমাইন্ড এর চেয়ারম্যান আবু আনাস শুভম সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওয়াচক্যাম ম্যাস সাভিলেন্স সিস্টেম ছয়টি কাজ করে। এর মধ্যে রয়েছে-কারো মুখে মুখোশ  আছে কিনা শনাক্ত করে সে অনুযায়ী সতর্ক করতে পারবে। মুখোশ থাকলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তার চেহারা উন্মোচন করার চেষ্টা করবে। ডাটাবেজ থেকে দ্রুত পরিচয় খুঁজে বের করবে। কোরেন্টাইন বা আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিরা মুখোশ পরে ঘোরাফেরা করলেও ট্রেস করতে পারবে। ভিডিও ফুটেজ থেকে কন্টাক্ট ট্রেসিং করে তালিকা দিতে পারবে এবং জনসমাগম হয় এমন স্থানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করণে স্বংক্রিয় নজরদারি করতে পারবে।

আরো বলা হয়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এই মুহূর্তে দরকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং জন্য সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। দেশের এত বিপুল সংখ্যক মানুষ কে নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার ব্যক্তিদের  পক্ষে দীর্ঘ সময় রাস্তায় নেমে নজরদারি করা সম্ভব নয়। সবাই মুখোশ পরছে কিনা সেটা নিশ্চিত করার জন্য জনবল নিয়োগ করাও অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে অটোমেশনই ভরসা। আর এই পূর্ণ অটোমেশন এর সমাধান দিচ্ছে সিগমাইন্ড-এর ওয়াচক্যাম ম্যাস সাভিলেন্স সিস্টেম।

এ বিষযয়ে সিগমাইন্ড চেয়ারম্যান আবু আনাস শুভম বলেন, ‘মুখোশ পরিহিত ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তি নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম গত বছর থেকে।  সেটা যে এত তাড়াতাড়ি এভাবে প্রয়োজন হয়ে পড়বে তা তা ভাবিনি। বর্তমানে আমাদের প্রযুক্তিটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ৮৭.৩% একুরেসি তে মুখোশ পরিহিত  এবং ৯৯.৪% একুরেসি তে মুখোশ ছাড়া ব্যক্তিকে সনাক্ত করতে পারে। এছারাও সফটওয়ার টি ব্যাক্তির বয়স, লিঙ্গ, পরিধেয় পোষাকের রং ইত্ত্যাদি তত্থ্য বের করে সহজেই তাকে খুজে পেতে সহায়তা করবে। একই ভাবে গাড়ির রং, নম্বর প্লেট ইত্যাদি সয়ংক্রিয় ভাবে সনাক্ত পারে যা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষনে অনেক সময় বাচায়।’

সিগমাইন্ড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির তাবাসসুম বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সব দেশের সরকারই চাইছে নাগরিক দের আরো কঠোর ভাবে নজর দারি করতে যা আমাদের এই প্রযুক্তি সুবিধা ব্যবহার করে সহজেই করা সম্ভব। ইতিমদ্ধে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা সাফল্যের সাথে আমাদের প্রযুক্তি ব্যাবহার করছে। সরকারের আইসিটি ডিভিশনের আইডিয়া প্রকল্পের সদস্য হিসেবে বর্তমানে দেশে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থাগুলোর সাথে যৌথ ভাবে কাজ করার নিরলস প্রয়াস ব্যক্ত করছি।’

সিগমাইন্ড-এর পরিচালক ও ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন মনে করেন, সিগমাইন্ডের মেধাবী দল তাদের কৃত্রিম প্রযুক্তি দিয়ে সমাজে পরিবর্তন আনতে গবেষণা এবং উন্নয়ন ও উদ্ভাবন নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন রকম প্রয়োগে জোর দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে ২০১৭ সাল থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রায়োগিক গবেষণায় অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে সিগমাইন্ড। যার ধারাবাহিকতায় বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রযুক্তিগত সমাধান নিয়ে এগিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তাধারার ও তার প্রায়োগিক গবেষণার জন্য বিভিন্ন সময়ে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছে সিগমাইন্ড।