শেয়ার বিজ ডেস্ক: সম্প্রতি সুইডেনে একটি মসজিদের সামনে কোরআন পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে একদল আন্দোলনকারী। সুইডেনের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ওই ঘটনা মুসলিম বিশ্বে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। ওই ঘটনার উল্লেখ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে বিশেষ আলোচনার দাবি জানিয়েছিল পাকিস্তান। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মঞ্চে মঙ্গলবার থেকে সেই আলোচনা শুরু হয়েছে। পাকিস্তানসহ মুসলিম বিশ্বের একাধিক দেশ ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। খবর: ডয়চে ভেলে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ইসলামোফোবিয়া, হেট স্পিচ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে মানুষে মানুষে ব্যবধান আরও বাড়ছে। সহিংসতা উসকে দেওয়া হচ্ছে।’
বস্তুত বৈঠকে মুসলিম বিশ্বের তরফে বলা হয়েছে, কোরআন মুসলিমদের কাছে একটি আবেগের বিষয়। কোরআন পোড়ানো মুসলিমদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে। ফলে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠন ইউএনএইচসিআরের প্রধান ভলকার টার্ক বলেছেন, ‘মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ, ইসলামোফোবিয়া, ইহুদিবিদ্বেষ, খ্রিষ্টানদের নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। একইভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেমন—আহামেদি, ইয়াজেদি, বাহাইদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ অন্যায়। এই সবকিছুই অন্যায় এবং বন্ধ করা প্রয়োজন।’
আলোচনা, শিক্ষা ও ধর্মীয় আদান-প্রদানের মাধ্যমে হেটস্পিচ বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন টার্ক। এর জন্য সমস্ত দেশকে এগিয়ে আসতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, কোরআন জ্বালানোর ঘটনা সার্বিকভাবে বিদ্বেষ তৈরি করেছে, সহিংসতার জন্ম দিয়েছে এবং মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে। এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার।
সুইডেনের দক্ষিণপন্থী সরকারও মনে করে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা অনভিপ্রেত। কিন্তু তাদের বক্তব্য, সংবিধান সবাইকে বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার দিয়েছে। কোরআন পুড়িয়ে যারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তাদেরও সাংবিধানিক অধিকার আছে। সে কারণেই তাদের বাধা দেওয়া হয়নি।
মুসলিম বিশ্বের দাবি, এ ঘটনা মুসলিম জনসমাজের বিশ্বাসের ওপর আঘাত। একেও একধরনের ইসলামোফোবিয়া বলা যেতে পারে। এ নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর মঞ্চেও আলোচনা হয়েছে। টার্কও মনে করেন, কোরআন পোড়ানোর ঘটনা কেবল ব্যক্তি অধিকার নয়, ব্যক্তির অধিকার কত দূর পর্যন্ত মেনে নেওয়া হবে—এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।
আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এই বৈঠক চলবে। অন্য দেশগুলোও সেখানে তাঁদের বক্তব্য জানাবে। মুসলিম বিশ্ব চাইছে, কোরআন পোড়ানো নিয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হোক।