কোরবানির চাহিদার অধিক সংখ্যক পশু প্রস্তুত যশোরে

মীর কামরুজ্জামান মনি, যশোর : আর কয়েকদিন পর কোরবানির ঈদ। গত বছরের মতো এবারও চাহিদার চেয়ে বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছে যশোরের খামারিরা। তাই শেষ মুহূর্তে খামারের পশুর পরিচর্যায় খামারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে শেষ সময়ে কাক্সিক্ষত দাম পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছেন তারা।

জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধের পর থেকে যশোরসহ দক্ষিণের জেলাগুলোতে গরুর খামারির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে এ মুহূর্তে জেলার ৮টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৯ হাজার ছোট-বড় খামারে দেশি পদ্ধতিতে গরু ও ছাগল পালন করছেন। এসব গরু ও ছাগলের কিছু কিছু ইতোমধ্যে কোরবানির হাটে উঠতে শুরু করেছে। এ বছর জেলায় চাহিদার অধিক সংখ্যক পশু প্রস্তুত আছে কোরবানির জন্য।

খামারিরা জানান, এ বছর কোরবানির পশু পালনে তাদের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। মূল্যস্ফীতির কারণে পশু হƒষ্টপুষ্ট করতে খরচ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। সে কারণে শেষ সময়ে ন্যায্য দাম পাবেন কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে তাদের।

খামারিদের দাবি, এ বছর গরু পালনে খরচ বেড়েছে। গরু পালনের খরচ উঠানো নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে যশোরের বাঘারপাড়ার খামারি আকরামুজ্জামান বলেন, এবার খরচ শুধু বেশি নয়, অনেক বেশি হয়েছে। যা আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। তিন লাখ টাকা দামের একটি গরুতে লালন-পালনে ইতোমধ্যে  ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার মতো খরচ হয় বলে খামারিরা জানান।

জেলার বাঘারপাড়ার ভাঙ্গুড়া গ্রামের খামারি টিপু সুলতান বলেন, তার খামারে ২০টি গরু আছে। তবে সাইজে ছোট। কোরবানির সময় ছোট সাইজের গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় এ বছর ভালো দাম পাবেন বলে আশা করেন তিনি। তিনি বলেন, গত বছর কোরবানির শেষ সময়ে এসে গরুর বাজারে ধস নামে। যে কারণে অনেক গরু অবিক্রীত থেকে যায় খামারিদের। একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে এ সংকট তৈরি করে। এ বছর এমন পরিস্থিতি হলে তাদের পথে বসতে হবে বলে তিনি জানান। আরেকজন খামারি বলেন, এ বছর গরুর পেছনে যা খরচ বেড়েছে, গরু বিক্রি করে তা উঠবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

তবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, কোরবানির পশুর বাড়তি চাহিদা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে অন্যান্য জেলাতে পশু পাঠানোর সুযোগ থাকায় লোকসান হওয়ার আশঙ্কা নেই। ফলে খামারিরা যে শঙ্কা করছেন তা ঠিক নয়।

এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাশেদুল হক বলেন, এখন দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ উন্নত। পদ্মা সেতু দিয়ে হোক বা অন্য কোনোভাবে হোক খামারিরা বেশ সহজেই তাদের গরু দেশের অন্যত্র নিয়ে যেতে পারবেন। তাছাড়া আমি প্রত্যাশা করছি, খামারিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন।

তিনি বলেন,  জেলায় এ বছর কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৮৬ হাজার। যার বিপরীতে পরিচর্যা করা হচ্ছে ৯৬ হাজার পশু। আশা করছি কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০