নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘আসন্ন ঈদুল আজহায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্দেশে নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশুর হাট বসবে। এর বাইরে পশুর হাট বসতে দেয়া হবে না।’
গতকাল স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে অনলাইনে আয়োজিত ‘ঈদুল আজহা ২০২১’ উপলক্ষে কোরবানির পশুরহাট ব্যবস্থাপনা, নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই করা এবং কোরবানির বর্জ্য অপসারণের প্রস্তুতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ভারতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় দেশটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশের দেশ হওয়ায় আমাদের দেশেও কিছু এলাকায় বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় এ ভেরিয়েন্ট দেখা দিয়েছে। তাই এ বছর সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেই পশুরহাট বসানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষ পশুরহাট বসানো এবং পশু জবাইয়ের জন্য যে স্থান নির্ধারণ করবে, শুধু সেখানেই এগুলো করতে হবে। এর বাইরে কোরবানির পশুর হাট ও পশু জবাই করতে দেয়া হবে না। শহর-নগর, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ এলাকায় সবার জন্য সুবিধামতো জায়গায় গরুর হাট বসানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
আমাদের দেশের ভারতীয় সীমান্ত এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ভারত থেকে দেশে বৈধ-অবৈধ পথে অনেক পশু আসে এবং মানুষ যাতায়াত করে থাকে। ভারতীয় ভেরিয়েন্ট আমাদের দেশে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’ কোনো অবস্থায় যেন ভারত থেকে বৈধ-অবৈধভাবে মানুষ এবং পশু না আসে, সেজন্য নিজ নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্টদের শক্ত অবস্থানে থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক জায়গায় সড়ক-মহাসড়ক ও রেললাইনের ওপরে কোরবানির পশুর হাট বসানো হয়। কর্তৃপক্ষ এসব জায়গায় হাট বসানোর ইজারা দেয় না। কিন্তু অবৈধভাবে এসব জায়গায় পশুর হাট বসানো হয়। রাস্তার ওপরে পশুর হাট বসানো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিসহ সবার সমন্বিত উদ্যোগে এটি বন্ধ করতে হবে। যেখানে-সেখানে হাট বসতে দেয়া যাবে না।’
কোরবানি দেয়ার পর দ্রুত বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের মেয়র, পৌর মেয়রসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের সব জনপ্রতিনিধি নিজ নিজ উদ্যোগে দ্রুত বর্জ্য অপসারণ করবেন।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পশুর হাট বসানোর জন্য গত বছর গণমাধ্যমে জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ বছরও এটি করা হবে।’ সিটি করপোরেশন ছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠান নিজস্ব উদ্যোগে সচেতনামূলক প্রচার-প্রচারণা চালাবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের মন্ত্রী জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনদুর্ভোগ কমাতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান। সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সব সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য, তথ্য ও সম্প্রচারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব এবং বিভিন্ন অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।