Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 10:33 am

কোরবানির বর্জ্য অপসারণ আতিক ছয় ঘণ্টায়, তাপস ২৪ ঘণ্টায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এরই মধ্যে ঢাকার দুই মেয়র নিজ নিজ এলাকার বর্জ্য অপসারণের সময়সীমাও ঘোষণা করেছেন।

এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ঈদের দিন ছয় ঘণ্টার মধ্যে নগরের রাস্তাঘাট থেকে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দেন। একইভাবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

গতকাল বুধবার ঢাকায় পৃথক দুটি প্রোগ্রামে এ ঘোষণা দেন তারা। ১৭ জুন দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে ডিএনসিসি এলাকায় ছয়টি ও ডিএসসিসি এলাকায় ১০টি অস্থায়ী পশুর হাট বসবে। এর বাইরে ডিএসসিসির সারুলিয়ায় পশুর হাট ও ডিএনসিসির গাবতলিতে স্থায়ী হাট রয়েছে।

রাজধানীর গাবতলীতে ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন ডাম্প এবং কম্প্যাক্টের ট্রাকের সংযোজন অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর সবার চেষ্টায় উত্তর সিটি করপোরেশন আট ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছিল। এবার আমাদের টার্গেট ছয় ঘণ্টার মধ্যেই বর্জ্য অপসরণ করা। ৪০টি ট্রাক যুক্ত হওয়ায় এ বছর বর্জ্য অপসারণে আরও গতি বাড়বে। যে আটটি আধুনিক কম্প্যাক্টর ট্রাক যুক্ত হলো এগুলো সাধারণ ট্রাকের চেয়ে ১০ গুণ বেশি বর্জ্য অপসারণে সক্ষম। কম্প্যাক্ট করার মাধ্যমে একসঙ্গে অনেক বর্জ্য বহন করতে পারবে এই ট্রাকগুলো।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বহরে করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ৩২টি ডাম্প ট্রাক এবং আটটি আধুনিক কম্প্যাক্টর ট্রাক যুক্ত হয়েছে। এছাড়া ডিএনসিসির বহরে একটি আধুনিক ভ্রাম্যমাণ টয়লেট যুক্ত হয়েছে। এই ট্রাকগুলোর মাধ্যমে করপোরেশন প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ৩৫০ টন বর্জ্য অপসারণ করতে পারবে। নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই যানবাহন যুক্ত করার মাধ্যমে ডিএনসিসির সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রমাণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে সিটি করপোরেশনকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি।

ছয় ঘণ্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণের সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ঈদে বর্জ্য অপসারণের জন্য ১০ হাজারের অধিক কর্মী কাজ করবে। ১০ লাখ ৪০ হাজার পলিব্যাগ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া পর্যাপ্ত ব্লিচিং পাউডার, স্যাভলন, টুকরি ও ফিনাইল দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলররা ও ডিএনসিসির কর্মীরা মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করবেন। আমি নিজে মাঠে থাকব। জনগণকে অনুরোধ করছি যত্রতত্র কোরবানির বর্জ্য ফেলবেন না, নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেবেন। গতবারের মতো জনগণের সহযোগিতা পেলে নির্ধারিত ছয় ঘণ্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করব।

অন্যদিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণায় ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ঈদের দ্বিতীয় দিনের মধ্যে কোরবানি শেষ করার আহ্বান জানান।

মেয়র বলেন, পশুর হাটের ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঢাকাবাসী খুব স্বচ্ছন্দে কোরবানির পশু হাট থেকে কিনতে পারবেন। হাটের কারণে যাতে নগরে যানজট না হয়, সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

মেয়র তাপস বলেন, জাতীয় ঈদগাহে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, বিচারপতিরাসহ ভিআইপিরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন। সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বৃষ্টিতে যেন নামাজের বিঘ্ন না ঘটে, সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। মহিলাদের জন্য নামাজের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মুসল্লিরা স্বচ্ছন্দে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

জাতীয় ঈদগাহ মাঠ ঈদের জামাতের জন্য ১৬ জুন সম্পূর্ণ প্রস্তুত হবে বলে জানান তিনি।

কোরবানির পশুর হাটের বিষয়ে মেয়র তাপস বলেন, ঈদ উপলক্ষে যে কোরবানি করা হয়, সারা দেশ থেকে কোরবানির পশু রাজধানীতে বিক্রির জন্য আনা হয়। এ কারণে পশুর হাট দিনে দিনে বৃদ্ধি করতে হচ্ছে। প্রতিটি হাটে আমাদের অভিযোগ কেন্দ্র রয়েছে। মোবাইল কোর্ট দায়িত্ব পালন করছে। কোরবানির ঈদের আগের দিন থেকে তিনদিন সিটি করপোরেশনের সব কর্মকর্তাকে কেন্দ্রীয়ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত করা হয়েছে। তারা তদারকি করবেন।

তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী স্বচ্ছন্দে পশুর হাটগুলো পরিচালিত হবে এবং রাজধানীবাসী নিরাপদে পশু কিনতে পারবেন। কেউ বিড়ম্বনায় পড়বেন না। তারপরও কেউ কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হলে হাটগুলোয় থাকা আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলো ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে জানালে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।