নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে কোহিনূর কেমিক্যালস কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে চার কোটি ৪৪ লাখ ২৪ হাজার ৮০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয় ২২ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার টাকার শেয়ার।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছয় দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ৩৪ টাকা ১০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৫২৮ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৫১৭ টাকা ৪০ পয়সা। দিনজুড়ে ৮৮ হাজার ১৬টি শেয়ার মোট এক হাজার ৮৩৫ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর চার কোটি ৫৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা। আর দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৫০০ টাকা টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫৩৪ টাকায় ওঠানামা করে। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ৩০০ টাকা থেকে ৫৩৪ টাকায় ওঠানামা করে।
ওষুধ ও রসায়ন খাতের এ কোম্পানিটি ১৯৮৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ২০ কোটি ১৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৬৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির দুই কোটি এক লাখ ৮২ হাজার ৫০০ শেয়ার রয়েছে। ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৪৮ দশমিক ৭২ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক ১৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৩৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ শেয়ার।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ২০ শতাংশ নগদ ও ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছে। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে ১০ টাকা ৩৭ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি এনএভি দাঁড়িয়েছে ৫২ টাকা ৪২ পয়সা।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ ও ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে, যা তার আগের বছর ছিল ১৫ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ১১ টাকা শূন্য দুই পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৫১ টাকা ৯৩ পয়সা। আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে ১২ টাকা চার পয়সা ও ১৪ টাকা ৬৮ পয়সা।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে এক কোটি ৩৯ লাখ ১৭ হাজার ৬০০ টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি ৯৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর এক দশমিক ৪৪ শতাংশ বা ৩০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২১ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল ২০ টাকা ৬০ পয়সা। দিনভর কোম্পানিটির ৯ হাজার ৪৫০টি শেয়ার মোট ৪৫ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা। ওই দিন শেয়ারদর সর্বনি¤œ ২০ টাকা ২০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২১ টাকা ২০ পয়সায় ওঠানামা করে। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ১৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩৩ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠানামা করে।
ডিএসইর তথ্যানুসারে, ২০১৪ থেকে লোকসানে রয়েছে কোম্পানিটি। যার কারণে কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি।
কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে জেড ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে কোম্পানিটি। ১০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন সাত কোটি ৭০ লাখ টাকা। রিজার্ভে লোকসানের পরিমাণ তিন কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির মোট ৭৭ লাখ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য মতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ২৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক ৯ দশমিক শূন্য এক শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে বস্ত্র খাতের এপেক্স স্পিনিং অ্যান্ড নিটিং মিলস। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন দুই কোটি ২২ লাখ ৫৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ১২ লাখ ৭৭ হাজার টাকার শেয়ার।
সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছয় দশমিক দুই দশমিক ২১ শতাংশ বা তিন টাকা ১০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ১৩ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ১৩৪ টাকা ৮০ পয়সা। দিনজুড়ে এক লাখ ৮৩ হাজার ৪২৪টি শেয়ার মোট এক হাজার ১২২ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর দুই কোটি ৫২ লাখ ১১ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১২৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৪২ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়। এক বছরে শেয়ারদর ৭৬ টাকা থেকে ১৪৬ টাকা ৯০ পয়সায় ওঠানামা করে।
এদিকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০১৯) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে এক টাকা ৩২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল এক টাকা ৩৭ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস পাঁচ পয়সা কমেছে। এছাড়া ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য হয়েছে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা, যা ২০১৯ সালের ৩০ জুনে ছিল ৫৫ টাকা আট পয়সা। আর এ প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ ১১ টাকা ৬০ পয়সা লোকসানে ছিল, যা আগের বছর একই সময় ছিল চার টাকা ২৮ পয়সা।
১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি এ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৩০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন আট কোটি ৪০ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৩৬ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির মোট ৮৪ লাখ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৫৪ দশমিক ৮১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ, বিদেশি দশমিক ২৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ২১ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।