Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:09 pm

কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণে সময় বাড়ছে

 

নিয়াজ মাহমুদ: কৌশলগত বিনিয়োগকারী (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার) হতে দেশি-বিদেশি একাধিক প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করে প্রাথমিক চুক্তি সম্পন্ন করলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত করতে পারেনি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ। তাই সময় বাড়ানোর জন্য বিদায়ী বছরের শেষ দিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। ডিএসই ও সিএসই এক বছরের জন্য সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও ছয় মাস সময় বাড়ানোর কথা ভাবছে কমিশন।

২০১৩ সালের স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচুয়ালাইজেশন (মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক্করণ) আইনে বিদায়ী বছরের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে স্টক এক্সচেঞ্জের সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সইয়ের বাধ্যবাধকতা ছিল। আইনানুযায়ী এক বছরের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রির সময় বেঁধে দেয় বিএসইসি। গত ১২ ডিসেম্বর এক বছর সময় শেষ হলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

জানা গেছে, এর পরে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ বিএসইসির কাছে এক বছর সময় বাড়ানোর আবেদন করে। তবে কমিশন এক বছর সময় বাড়াতে নারাজ। সংস্থাটি এ কার্য সম্পাদনের জন্য সর্বোচ্চ ছয় মাস বাড়ানোর কথা ভাবছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। এখন সময় বাড়ানোর বিষয়টি অফিসিয়ালভাবে নির্ধারণ করা হয়নি বলে ডিএসই ও সিএসইকে এ বিষয়ে এখনও কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। তবে শিগগিরই উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে বিএসইসির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে স্টক এক্সচেঞ্জের কাজে কমিশন পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তবে কিছুটা হলেও এ কাজের অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করে কমিশন। বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ছয় মাস সময় বাড়ানোর জন্য শিগগিরই ডিএসই ও সিএসইকে চিঠি দেবে বিএসইসি।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হতে তিন দফায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেছে ৯টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান। খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার নাসডাক, বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি), কমনওয়েলথ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (সিডিসি), সুইডেনভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্স, জার্মানিভিত্তিক কেএফডব্লিউ, হংকংভিত্তিক কিংসওয়ে ক্যাপিটাল, ওয়াটারহাউস কুপার্স, আইআইডিএফসি ও দেশি প্রতিষ্ঠান স্কয়ার। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে বলে জানায় ডিএসই। যদিও অপর পুঁজিবাজার সিএসই ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সঙ্গে সোমবার সমঝোতা স্মারক সই করেছে।

পুরো প্রক্রিয়ার অগ্রগতি বিএসইসিকে অবহিত করে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে বলে জানান ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেএএম মাজেদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি শেয়ার বিজকে বলেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ করা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, ডি-মিউচুয়ালাইজেশন আইনে ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিক স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য বা ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান, ৩৫ শতাংশ শেয়ার আইপিও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রি করার বিধান রাখা হয়েছে। আর বাকি ২৫ শতাংশ শেয়ার কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে হস্তান্তর করতে হবে।