নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালের আইসিইউতে উচ্চমাত্রার কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহারে অবহেলা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। এবিষয়ে কর্তৃপক্ষের অনিয়ম-অবহেলা খতিয়ে দেখে এক মাসের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিবকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেয়।
রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত হাসপাতালটির সদ্য বিদায়ী পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াররফ হোসেনের অবসরকালীন সুবিধা স্থগিত রাখতে বলেছে বলেও জানান আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বিষয়টি তিনিই আদালতের নজরে আনেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. এমদাদুল হক।
মনোজ ভৌমিক পরে সাংবাদিকদের বলেন, “প্রতিবেদনটি পড়ে মনে হয়েছে, এর সাথে ব্যাপকভাবে জনস্বার্থ জড়িত। ব্যয়বহুল যন্ত্রপাতি কেনার পর তা যথাযথভাবে স্থাপন না করে বছরের পর বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি মানুষকে উপযুক্ত চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।
“সংবিধানস্বীকৃত মানুষের বাঁচার অধিকারের প্রতি এটা স্পষ্ট অবহেলা। তাই বিষয়টি আদালতের নজরে এনেছিলাম। আদালত অন্তর্বর্তী আদেশের সাথে রুল জারি করেছেন।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১২ বছর আগে ক্যান্সার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) জন্য ৭০ লাখ টাকা দরে আটটি উচ্চমাত্রাসম্পন্ন আর্টিফিশিয়াল রেসপিরেটরি ভেন্টিলেটর (এআরভি) মেশিন কেনা হলেও সেগুলো বসানো হয়নি। ফলে আইসিইউতে সঙ্কটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এখন হাসপাতালটির আইসিইউতে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেই। অক্সিজেন সরবরাহের জন্য একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা তিন বছর আগে চালু হলেও ভেন্টিলেটরগুলো এখনও বসানো হয়নি। এর মধ্যেই ভেন্টিলেটরগুলোর মাদারবোর্ড চুরি হয়ে গেছে। ফলে যন্ত্রগুলো এখন পুরোপুরি অকেজো।
হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ গেল বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর পরিচালককে চিঠি দিয়ে মেশিনগুলি স্থাপনের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করলেও তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইসিআরএইচ) বাংলাদেশের দরিদ্র ক্যান্সার রোগীদের একমাত্র ভরসা।
ক্যান্সার নিয়ে গবেষণাকারী একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় একলাখ ৮ হাজার মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আরও প্রায় দেড় লাখ এ রোগে আক্রান্ত হয়।
