Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:58 pm

ক্রয় প্রবণতায় ফিরল হারানো সূচক

মো. আসাদুজ্জামান নূর: চলতি সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে গতকাল ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন হওয়া সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার মাধ্যমে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে সূচক। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দিনের শুরুতে ক্রেতারা সক্রিয় ছিলেন। সার্বিকভাবে বাজারে সব খাতে বিনিয়োগকারীদের ক্রয় প্রবণতা থাকায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

আগের কার্যদিবসের মতো গতকালও ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে ‘বিক্রয় চাপ’ দেখা গেছে। ‘জেড’ ক্যাটেগরির শেয়ার ছেড়ে ‘বি’ ক্যাটেগরির শেয়ার কিনেছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে ক্রয় চাপ ছিল। এর প্রভাবে মূল্যসূচক ৬৮ দশমিক ৪ পয়েন্ট বাড়তে দেখা গেছে। সূচক বাড়লেও টাকার অঙ্কে লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে কমতে দেখা গেছে।

খাতভিত্তিক লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল সিমেন্ট ও জ্বালানি খাতে বেশি বিনিয়োগ করেছেন ক্রেতারা। ফলে বেশ ভালো ‘ক্রয় চাপ’ ছিল এ খাতে। অন্যদিকে আইটি ও খাদ্য খাতের শেয়ার ছেড়ে দিতে দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের। এছাড়া সিমেন্ট খাতে শূন্য দশমিক ১৩১ শতাংশ বাজার মূলধন বেড়েছে।

গত সোমবার ডিএসইতে এক হাজার ৭৫ কোটি ১৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়। গতকাল সেটা কমে এক হাজার ৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এতে সবচেয়ে বেশি ১৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা অবদান রেখেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। ১৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের সিংহভাগ কোম্পানির দর বাড়তে দেখা গেছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ১৮টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে ৯টির ও অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে ৩টির। আগের কার্যদিবসের চেয়ে গতকাল এ খাতে লেনদেন বেশি ছিল।

আগের কার্যদিবসে শীর্ষে থাকা বস্ত্র খাত গতকাল দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে। ১৪৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে গতকাল এ খাতের অবদান ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। যদিও আগের কার্যদিবসে এ খাতের অবদান ছিল ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গতকাল এ খাতের সর্বোচ্চ ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে। এর বিপরীতে শেয়ারদর কমে ১৪টির ও অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে ৬টির।

১০৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হওয়া বিবিধ খাত তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসে। এ খাতের সব কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে। ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের ৮টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে ৪টির ও অপরিবর্তিত ছিল মাত্র একটির। আগের কার্যদিবসে কম লেনদেনের মাধ্যমে এ খাতের অবদান ছিল ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ।

৯ দশমিক ৯ শতাংশ অবদান রাখা ব্যাংক খাতে ৮৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। চতুর্থ অবস্থায় থাকা এ খাতের লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে শেয়ারদর বাড়ে ১২টির, কমেছে ৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১৩টির। আগের কার্যদিবস সোমবার এ খাতের অবদান ছিল ১৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা সিমেন্ট খাতের লেনদেন হয় ৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন এর চেয়ে কম হয়েছিল। এ খাতের ৬টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে ও অপরিবর্তিত ছিল একটির। এ খাতের অবদান ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। সোমবার এটি ছিল ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। গতকালের লেনদেনে প্রকৌশল খাত ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ, খাদ্য ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও জ্বালানি খাত ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ অবদান রাখে।

গতকাল ডিএসইর তিনটি সূচকের উত্থান হতে দেখা গেছে। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬৮ পয়েন্ট। দিনশেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়ায় ছয় হাজার ৮৬৮ পয়েন্ট। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১৭ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে এক হাজার ৪৫৪ পয়েন্ট এবং বিশেষ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ সূচক ৩২ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে দুই হাজার ৬১৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। এছাড়া গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২২৩টির, কমেছে ৯৯টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৫৪টির।