Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 3:24 am

ক্রেডিট কার্ডবিষয়ক নির্দেশনা পরিপালনে পদক্ষেপ কাম্য

আর্থিক লেনদেনে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। বড় ধরনের কেনাকাটায় সঙ্গে থাকা ক্রেডিট কার্ডটি বেশ কাজে আসে। অবশ্য ক্রেডিট কার্ড নিয়ে একধরনের ভীতি কাজ করে। তারা ভাবে, এটা শেষে ব্যয়ের ফাঁদই হয়ে যায় কি না। এরপরও কিছু কারণে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা কম নয়।

দামি কোনো জিনিস কেনা প্রয়োজন। একসঙ্গে এত টাকা জোগাড় করা যাচ্ছে না, কেউ ধারও দেবে না। পণ্যটি কিনতে ক্রেডিট কার্ডই বড় বিকল্প। কয়েক মাস ধরে মূল্য পরিশোধ করা যায়। এতে ঋণের বোঝা খুব বেশি মনে হয় না। সময়সীমা অনুযায়ী মূল্য পরিশোধ করতে পারলে ক্রেডিট কার্ডে ভয়ের কিছু নেই। আবার নগদ, ডেবিট কার্ড ও চেক ব্যবহারে ঝুঁকি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ডই ভরসা। কিছু ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান গ্রাহককে শূন্য শতাংশ সুদে ঋণ দেয়। কার্ডধারী সুবিধামতো কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন। ক্যাশ ব্যাক, স্পেশাল ডিসকাউন্ট প্রভৃতি বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায় ক্রেডিট কার্ডে। দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে, হোটেলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে অনেক সময়ই মূল্যছাড় দেয়া হয়। তারকা হোটেল, উড়োজাহাজের টিকিট কাটতেও অনেক সময় পাওয়া যায় বিশেষ মূল্যছাড়।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে অতি সতর্কতা দরকার। ক্রেডিট কার্ডের শর্তাবলি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। ব্যবহারকারীর আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কার্ড বেছে নিতে হবে। একটু সুবিধা পাওয়ার জন্য শেষে ঋণগ্রস্ত হয়ে গেলে তা তো পরিশোধ করতে হবে। পরিমিতিবোধের পরিচয় দিতে পারলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। যত সীমাবদ্ধতা থাকুক, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনেকে উপকৃত হয়েছেন।

গ্রাহকদের মতে, ক্রেডিট কার্ডের বড় সমস্যা হলো, এটির লুকায়িত ব্যয়। কখনও কখনও টাকা কেটে নেয়া হয়, গ্রাহক জানেন না। মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এখন থেকে ক্রেডিট কার্ড সক্রিয় না হওয়া পর্যন্ত কোনো চার্জ কাটতে পারবে না ব্যাংক। ‘নন-ট্রানজেকশনাল ফি’ নামে সেবা ফি কেটে রাখতে পারবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

গতকাল শেয়ার বিজের প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাহকের নামে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু হওয়ার পর থেকেই সেবা ফি কাটতে শুরু করে ব্যাংক। গ্রাহকের কাছে ক্রেডিট কার্ড পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে কিংবা গ্রাহক কার্ড অ্যাকটিভেট বা সক্রিয় না করলেও সার্ভিস চার্জ কেটে রাখে ব্যাংক। এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা যথানিয়মে পরিপালিত হলে গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না এবং চার্জ সংক্রান্ত অপরিশোধিত দায়ের জন্য গ্রাহককে খেলাপি করা যাবে না। নির্দেশনা জারির পরই তা যেহেতু কার্যকর হয়েছে বলে ধরা হবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়। তাই আমরা আশা করি, ব্যবহারকারীরা ক্রেডিট কার্ড নিয়ে নতুন করে জটিলতার শিকার হবে না। এ লক্ষ্যে তদারকিও করতে হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। নতুন করে এ-সংক্রান্ত অভিযোগ এলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।