মো. আসাদুজ্জামান নূর: পুঁজিবাজারে গতকাল ক্রেতা-বিক্রেতারা সমানভাবে সক্রিয় ছিলেন। ফলে দিনশেষে লেনদেন ও সূচকের সামান্য উত্থানে শেষ হয়েছে লেনদেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ইতিবাচক থাকলেও অন্য দুই সূচকের পতন দেখা গেছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গতকাল ১৯টির মধ্যে ১১টি খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধি পায়। বাকি আটটি খাতের শেয়ারদর হ্রাস পেতে দেখা গেছে। লেনদেনে অংশ নেয়া সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পাওয়ার দিনে গতকাল বাজার মূলধন হ্রাস পেয়েছে শূন্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। তবে বিনিয়োগকারীদের ‘ক্রয় চাপে’ শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক থাকে বাজার।
গতকাল বাজারে ৫৫ শতাংশ ‘ক্রয় চাপ’ ও ৪৫ শতাংশ ‘বিক্রয় চাপ’ পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে ক্রেতাদের তুলনায় বিক্রেতারা বেশি সক্রিয় ছিলেন।
খাত হিসেবে বিমা ও সিমেন্টে সবচেয়ে বেশি ‘ক্রয় চাপ’ লক্ষ করা গেছে। অন্যদিকে পাট ও টেলিযোগাযোগ খাতে ‘বিক্রয় চাপ’ বেশি ছিল। ‘এন’ ক্যাটেগরির শেয়ারে ‘ক্রয় চাপ’ ও ‘বি’ ক্যাটেগরির শেয়ারে ‘বিক্রয় চাপ’ ছিল। এছাড়া বিমা খাতে গতকাল শূন্য দশমিক ২১৩ শতাংশ বাজার মূলধন হ্রাস পেতে দেখা গেছে।
গতকাল ডিএসইতে ৩৬৬টি কোম্পানির ৩৮ কোটি ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ৫৫১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। মোট লেনদেনের পরিমাণ এক হাজার ৫০৭ কোটি দুই লাখ টাকা। লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে ব্যাংক খাত। মোট লেনদেনের ২৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ, অর্থাৎ ৩৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এ খাতের অবদান ছিল। ১৬টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাসের বিপরীতে বেড়েছে ১০টির ও অপরিবর্তিত ছিল ছয়টির।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের লেনদেন হয় ১৯১ কোটি ১০ লাখ টাকা। ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের ১৩টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে ও হ্রাস পায় ১৭টির। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২২০ কোটি টাকার।
গতকাল বস্ত্র খাতে লেনদেন হয় ১৪৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সর্বোচ্চ ৩৪টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাসের দিনে এ খাতের অবদান দাঁড়ায় ১০ দশমিক ১০ শতাংশ। অন্যদিকে লেনদেন হওয়া ১৯টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে এবং অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে চারটির। তৃতীয় অবস্থানে থাকা এ খাতে গত মঙ্গলবার লেনদেন হয় ১৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
বিবিধ খাত চতুর্থ অবস্থানে ছিল। ১৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেনের দিনে এ খাতের অবদান দাঁড়ায় আট দশমিক ৯৯ শতাংশ। ১০টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাসের বিপরীতে বাড়ে মাত্র তিনটির। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৫৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা বিমা খাতের লেনদেন আগের কার্যদিবসের বাড়তে দেখা গেছে। গতকাল লেনদেন হয় ৮৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। পাঁচ দশমিক ৯৬ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতে আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ২৯ কোটি ৯০ লাখ। ৩৮টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার বিপরীতে মাত্র একটি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়।
এছাড়া গতকালের লেনদেনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পাঁচ দশমিক ৭৬ শতাংশ, প্রকৌশল খাত পাঁচ দশমিক ৫০ শতাংশ, জীবন বিমা পাঁচ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও আইটি খাত তিন দশমিক ৮১ শতাংশ অবদান রাখে।
ডিএসই ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে চার দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়ে সাত হাজার ৬০ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট, ডিএস-৩০ মূল্য সূচক সাত দশমিক ৯৭ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৬৮৩ দশমিক ৩০ পয়েন্ট ও ডিএসইএস শরিয়াহ্ সূচক ডিএসইএস শূন্য দশমিক ৬৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৮৪ দশমিক ১৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। লেনদেনকৃত কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫২টির, কমেছে ১৭৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টির।