হাসানুজ্জামান পিয়াস: পতনের ধারা থেকে বের হতে পারছে না দেশের পুঁজিবাজার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে পুঁজিবাজার নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। এর জেরে গত মাসের শেষ থেকেই পুঁজিবাজারে পতন দেখা যায়। ঈদুল আজহার ছুটির পরে পুঁজিবাজার পরিস্থিতির উন্নতি হবে এমনটা প্রত্যাশা থাকলেও ঈদের পর থেকে টানা পতন চলছে পুঁজিবাজারে। এদিকে সম্প্রতি যোগ হয়েছে দেশে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি পেট্রল পাম্প এক দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে বের হতে চাইছেন। ফলে বাজারে ক্রেতা সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। গতকালও প্রায় ২৪০ কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা সংক্রট ছিল। এতে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমার পাশাপাশি তলানিতে এসে ঠেকেছে লেনদেন।
একই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য হারে কমছে বাজার মূলধনও।
এদিকে বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইতে সিংহভাগ কোম্পানির দরপতনের ফলে ডিএসইএক্স এক শতাংশ বা ৬৩ পয়েন্টের বেশি কমে ছয় হাজার ১৫৩ পয়েন্টে স্থির হয়েছে। এছাড়া আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১৯৬ কোটি টাকা লেনদেন কমে ৩১৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে, যা গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ অবস্থানে লেনদেন। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ৫ এপ্রিল ২৩৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়। গতকাল ডিএসইতে মোট ৩১৯ কোটি টাকার লেনদেনের মধ্যে ব্লক মার্কেটে লেনদেন হয় প্রায় ২১ কোটি টাকা। এ মার্কেটে এদিন ৩৪ কোম্পানির লেনদেন হয়।
দিন শেষে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ফান্ডের ইউনিটের বাজার মূলধন কমে গেছে ৪ হাজার ৯১৪ কোটি টাকার বেশি। এর আগের কার্যদিবসেও ৫ হাজার ৮১০ কোটি টাকার বেশি বাজার মূলধন কমে যায়। এ দুই দিনের ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ফান্ডের বাজার মূলধন কমে যায় প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। গতকাল দিন শেষে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ফান্ডের বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা, আগের কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা।