হাসানুজ্জামান পিয়াস: থামছেই না পুঁজিবাজারের পতন। চলতি সপ্তাহে টানা তৃতীয় দিনের মতো গতকাল বড় পতন অব্যাহত ছিল। মূলত বাজারে ক্রেতা সংকটের জেরে তলানিতে গেছে লেনদেন। তবে খাতসংশ্লিষ্ট অনেকেই এ পতনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দায়ী করছেন। তাদের মতে, এ সময় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে এলে বাজারে গতি পরিবর্তন হতো। এদিকে পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে গেল সপ্তাহে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে স্টেকহোল্ডারদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক ছন্দপতন থামছে না। বাজারে এভাবে ধারাবাহিক দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কম দরেও শেয়ার ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন। এতে বিক্রির চাপ বাড়লেও বাজারে ক্রেতা সংকট দেখা গেছে। চলতি সপ্তাহের ধারাবাহিক পতনের ফলে লেনদেন নেমে অবস্থান করছে ৫০০ কোটি টাকার নিচে; যা গত এক বছরের মধ্যে ডিএসইতে সর্বনিন্ম লেনদেন। এর আগে গত বছরের ১২ এপ্রিল ডিএসইতে ৪৯৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাজারে শেয়ার ক্রয়ের চেয়ে বিক্রয় প্রবণতাই বেশি দেখা গেছে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বুধবার ১২০টির বেশি কোম্পানির শেয়ার ক্রেতাশূন্য ছিল। বিক্রয় চাপ বৃদ্ধি ও ক্রেতা সংকটের ফলে সিংহভাগ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমে যায়। পতন হয় সব সূচকের।
গতকাল দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক কমতে দেখা গেছে প্রায় ৩২ পয়েন্ট। লেনদেন শেষে গতকাল সূচকের অবস্থান হয়েছে ৬ হাজার ৬৬২ পয়েন্টে। এদিকে সূচকের পাশাপাশি দর হ্রাস পেয়েছে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৭৫টি কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হতে দেখা যায়। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। অন্যদিকে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ শেয়ার ও ইউনিটদর অর্থাৎ ২৯৩ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পাওয়ার কারণে উল্লেখযোগ্যহারে কমে গেছে বাজার মূলধন। এক দিনের ব্যবধানে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং ফান্ডের বাজার মূলধন হ্রাস পেয়েছে ২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। গতকাল দিন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকায়। আগের কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা।
গতকাল ডিএসইতে সর্বোচ্চ দুই শতাংশ দরপতনের মাধ্যমে টপ টেন লুজারের শীর্ষে উঠে আসে মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড। দরপতনের তালিকায় এর পরের শীর্ষ অবস্থানে ছিল যথাক্রমে রহিমা ফুড, জিকিউ বলপেন, ন্যাশনাল টি ও সোনালী পেপার।