Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 8:25 pm

ক্লিন ইমেজের স্বচ্ছ রাজনীতির তিন ভাগ্যবান:মন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদে দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আগের ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভার মাত্র ১৭ জন স্থান পেয়েছেন নতুন মন্ত্রিসভায়।
তাদের মধ্যে দুজন প্রতিমন্ত্রী ও একজন উপমন্ত্রী এবার ‘প্রমোশন’ পেয়ে নতুন মন্ত্রিসভায় হচ্ছেন পূর্ণ মন্ত্রী। ভাগ্যবান এই তিন নেতা হলেন— মহিবুল হাসান চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন ও ফরিদুল হক খান।

বুধবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন নতুন মন্ত্রিসভায় ডাক পাওয়া সদস্যদের নামের তালিকা গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেন।

তিনি জানান, তাদের সবাইকে বৃহস্পতিবার শপথ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জনানো হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের প্রকাশ করা তালিকায় দেখা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভার দুই প্রতিমন্ত্রী ও এক উপমন্ত্রী এবার শেখ হাসিনার দ্বাদশের মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে ডাক পেয়েছেন। তবে কাকে কোন মন্ত্রণালয় দেওয়া হচ্ছে, তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

বিদায়ী মন্ত্রিসভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এবার তাকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
আরেক প্রতিমন্ত্রী জামালপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক বিদায়ী এই মন্ত্রিসভায় যুক্ত হয়েছিলেন একটু পরে। প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর তিনি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তিন বছর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর এবার তিনি পূর্ণ মন্ত্রীই হতে যাচ্ছেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ হবে। এর পর তাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন হবে।

একাদশ সংসদের মন্ত্রিসভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন। মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে অনেকটাই ক্লিন ইমেজের অধিকারী ফরহাদ এবার পূর্ণ মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

মেহেরপুর-১ আসন থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ফরহাদ হোসেন। আগের মন্ত্রিপরিষদে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে এবার একধাপ এগিয়ে তিনি পূর্ণ মন্ত্রী হতে চলেছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনকালে তিনি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির পরিচয় দিয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদে শপথগ্রহণের জন্য আহ্বান করা হয়েছে তাকে। ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর জেলার মেহেরপুর সদর উপজেলার বোসপাড়া এলাকায় ৫ জুন ১৯৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক ছহিউদ্দীন বিশ্বাস। তিনি তৎকালীন কুষ্টিয়া-৫ ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০২২ সালে ছহিউদ্দিনকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

তার ছেলে ফরহাদ হোসেন বিএল কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যয়ন করেন। তিনি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেই সূত্র ধরেই তিনি রাজনীতিতে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করেন।

ফরহাদ হোসেন বর্তমানে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি প্রথম ২০১৪ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে মেহেরপুর-১ আসনে জয়লাভ করেন। পরে ২০১৮ সালে জয়লাভ করলে বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।

তার মাধ্যমে জেলাটি প্রথম মন্ত্রিত্বের স্বাদ পায় ফরহাদ হোসেনের মাধ্যমে। এবার পূর্ণ মন্ত্রিত্বের অলংকার যোগ হবে মেহেরপুর জেলার ইতিহাসে। ফরহাদ হোসেনকে পূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ায় খুশি এলাকার সাধারণ মানুষ।

তিনি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাতিজি সৈয়দ মোনালিসা ইসলাম শিলার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২০০৪ সালে। তার স্ত্রী শিলা স্থানীয় জেলা যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি। সামিন ও মাহিন নামে তার দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে।