নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে ডিজিটাল ক্রেডিট (অনলাইন বা মোবাইল সার্ভিসভিত্তিক লোন সুবিধা) কী ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এবং তা কীভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব তা নিয়ে ডিজিটাল ইকোনমি ও আর্থিক খাতের অংশীজনদের অংশগ্রহণে ছয় সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত সাপ্তাহিক অনলাইন ডিসকাশন সিরিজের (ওয়েবিনার) প্রথম সেশন গত শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত হয়।
পেশাজীবী সংগঠন ডিজিটাল ফাইন্যান্স ফোরাম বাংলাদেশ, ডিজিটাল ফ্রন্টিয়ার ইনস্টিটিউট (দক্ষিণ আফ্রিকা), বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রকল্প এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সিরিজের প্রথম দিনের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘বাজারে ডিজিটাল ক্রেডিটের চাহিদা’।
প্রথম দিনের সেশনে বাংলাদেশ ডিজিটাল ক্রেডিটের চাহিদা নিয়ে আলাপচারিতায় ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আরএফ হুসাইন, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী, জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউএনসিডিএফের বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল আলম, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) উজমা চৌধুরী, এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক নাজিম এইচ সাত্তার, পাঠাও-এর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ফাহিম আহামেদ প্রমুখ।
আশরাফুল আলম তার বক্তব্যে মোবাইল অপারেটর কর্তৃক গ্রাহককে প্রদত্ত ইমার্জেন্সি ব্যালেন্সকে ডিজিটাল ক্রেডিটের একটি সম্যক উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন। ডিজিটাল ফাইন্যান্স ইকোসিস্টেমের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে এ বিষয়ে সচেতনতা ও আস্থা সৃষ্টিকেই মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
সেলিম আরএফ হুসাইন ব্র্যাক ব্যাংকে গৃহীত ডিজিটাল ক্রেডিটের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, গত বছর থেকে ব্যাংকটি ডিজিটাল অর্থায়ন নিয়ে কিছু কাজ করেছে। তারা ২০১৮ সাল থেকে ডিজিটাল অর্থায়নের জন্য একটি উদ্ভাবনী সেন্টার চালু করেছে। ২০২১ সালের মধ্যে খুচরা ও এসএমই উভয় ক্ষেত্রেই ডিজিটাল ফিন্যান্স সিস্টেমে স্থানান্তরের জন্য বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠান একটি প্রজেক্ট পরিচালনা করছে বলেও জানান ব্র্যাক ব্যাংক সিইও।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী মনে করেন, ব্যাংকগুলো নিজেদের স্বার্থেই ডিজিটাল অর্থায়নে মনোযোগী হবে। গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় বর্তমানে ব্যাংক এশিয়া মাইক্রো মার্চেন্ট প্রজেক্টে পরিচালনা করছে এবং তারা গ্রামীণ জনগণকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক খাতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে।
পাঠাও-এর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ফাহিম আহামেদ তার প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল কার্যক্রমের ব্যাখ্যা করে জানান ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী অ্যাপ পাঠাও সক্রিয় ব্যবহারকারী বর্তমানে প্রায় ৬ মিলিয়ন। তিনি আরও বলেন, প্রায় ৩০ হাজার ই-কমার্সভিত্তিক মার্চেন্ট নিজেদের ব্যবসায় পরিচালনায় পাঠাও-এর প্ল্যাটফর্মের সেবা নিচ্ছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক নাজিম এইচ সাত্তার ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ঢাকার বাইরের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন এবং একই সঙ্গে ব্যাংক ছাড়াও অন্যান্য বিকল্প চ্যানেল সৃষ্টির মাধ্যমে উদ্যোক্তা ঋণ সরবরাহ বৃদ্ধির উদ্যোগ নিলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে বলে মন্তব্য করেন।