নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা টেকানোর দেনদরবার করতে ভারতে গেছেন। এই দেনদরবার করতে গিয়ে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব কতটুকু বিক্রি করছেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। জনগণ চেয়ে আছে, প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়ে কী করছেন, কতটুকু স্বার্বভৌমত্ব বিক্রি করে নিজের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।’
আজ বুধবার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে এখানে এসেছি যখন চারদিকে অন্ধকার। কারো কোনো কথা বলার অধিকার নেই। দেশে যে অন্যায়গুলো হচ্ছে, সেগুলোর প্রতিবাদ যারা করছে, তাদের ওপর নির্মমভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। সভা-সমাবেশ করা সর্বজনীন গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সমাবেশ যারা করছে, তাদের নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হচ্ছে। আপনারা জানেন, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশে আমাদের যে কর্মসূচি চলছে, সেগুলোতে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে প্রতিমুহূর্তে। তাদের আক্রমণে কেউ কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করছেন, কেউ চোখ হারাচ্ছেন। তিনজনের জীবনও চলে গেছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম প্রতি মূহূর্তে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। গতকালও ডিমের দাম আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিরোধী দল হিসেবে আমরা যখন প্রতিবাদ করছি, তখনই সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের ওপর অত্যাচার করছে। দেশের মানুষকে ক্ষুধায় রেখে, অনাহারে রেখে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলে রেখে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রী ওখানে (ভারত) গিয়ে তো তিস্তা চুক্তি করতে পারেননি। এখনও আমাদের যে ন্যায্য পাওনা, সেগুলোর একটিও আদায় করতে পারেননি। আজকে জোর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছেন, অথচ আমাদের ন্যায্য হিস্যা একবারও আদায় করতে পারেননি।’
বিএনপি নিজেরাই দেশকে অস্থিতিশীল করতে সারা দেশে হামলা করছে সরকারদলীয় নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা যুগে যুগে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসকরা করে আসছে। গণতান্ত্রিক শক্তির ওপর তারা বুলডোজার, স্টিমরোলার চালিয়ে তারাই আবার মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেয়।’
মিয়ানমারের বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘এটা তো নির্বাচিত সরকার নয়। তাদের গণভিত্তি নেই বলেই তাদের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত দুর্বল এবং নতজানু। দেশের এমন পরিস্থিতিতে একটা যে শক্ত প্রতিবাদের ভাষা, সেটাও সরকার দিতে পারছে না। কারণ, একদিকে তাদের গণভিত্তি নেই, অন্যদিকে অন্যান্য দেশের সমর্থনে তাদের টিকে থাকতে হচ্ছে। এ কারণে তাদের নতজানু হয়ে থাকতে হচ্ছে।’
এ সময় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, দক্ষিণের আহ্বায়ক রুমা আক্তার ও সদস্য সচিব নাসিমা আক্তার কেয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।