ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণক্ষমতা বাড়ল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণ ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এ জন্য মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি বিধিমালা, ২০১০ সংশোধন করেছে সরকার। এরই মধ্যে এই সংশোধনীর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। বিধিমালায় সংশোধন এনে তারল্য সঞ্চিতি ও সংরক্ষিত তহবিল রক্ষণাবেক্ষণ কমানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্ষুদ্র উদ্যোগে ঋণের অংশ এবং মেয়াদি আমানত নেয়ার হার বাড়ানো হয়েছে।

মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি বিধিমালা, ২০১০-এর ৩৪ ধারায় বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের মোট আমানতের ১৫ শতাংশ বাধ্যতামূলক তারল্য সঞ্চিতি হিসেবে শাখা কার্যালয়ের তফসিলভুক্ত ব্যাংক হিসাবে রাখতে হবে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নগদ এবং বাকি ১০ শতাংশ মেয়াদি সঞ্চয় হিসেবে রাখতে হয়।

বিধিমালা সংশোধন করে এখন এই হার কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণের জন্য নিজস্ব তহবিল বড় হবে এবং এর মাধ্যমে ঋণ বিতরণের সক্ষমতা বাড়বে।

এছাড়া বিধিমালার ২৮(ঙ) ও ২৯(ঙ) ধারায় সংশোধন আনা হয়েছে। ২৮(ঙ) ধারা অনুযায়ী, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান যে আমানত সংগ্রহ করে তার মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ স্বেচ্ছা আমানত নিতে পারবে। এই ধারায় সংশোধন এনে এখন স্বেচ্ছা আমানতের সর্বোচ্চ সীমা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে।

একইভাবে ২৯(ঙ) ধারা অনুযায়ী, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান যে আমানত সংগ্রহ করে তার মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ মেয়াদি আমানতে নিতে পারে। এখন এই ধারায় সংশোধন এনে মেয়াদি আমানতের সর্বোচ্চ হার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।

বিধিমালার ২৪(৩) বিধিতেও সংশোধন আনা হয়েছে। ২৪(৩) ধারায় বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র উদ্যোগ ঋণের পরিমাণ যেকোনো নির্দিষ্ট সময়ের মোট ঋণ পোর্টফোলিওর অর্ধেক বা ৫০ শতাংশের বেশি হবে না। এখন সংশোধন এনে এটি বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করা হয়েছে।

এসব সংশোধনী আনার পাশাপাশি বিধিমালার ২৮(খ) এবং ২৯(খ) বিধিতেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিধিমালার ২৮(খ) বিধি অনুযায়ী, গ্রাহকের কাছ থেকে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছা আমানত নিতে হলে সর্বশেষ তিন বছর লাভজনকভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দালিলিক প্রমাণ থাকতে হবে।

সংশোধনীতে এটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ‘তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দৈব-দুর্বিপাক বা অনুরূপ অন্য কোনো কারণে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান কোনো অর্থবছর লোকসান করলে ওই অর্থবছর বাদ দিয়ে ধারাবাহিক লাভজনকের বিষয়টি বিবেচনা করা যাবে এবং সেই ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দৈব-দুর্বিপাক বা অনুরূপ অন্য কোনো কারণের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।’ এটি নতুনভাবে বিধতে সংযোজন করা হয়েছে।

একইভাবে ২৯(খ) বিধি অনুযায়ী, ‘গ্রাহকের কাছ থেকে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের মেয়াদি আমানত নিতে হলে সর্বশেষ পাঁচ বছর লাভজনকভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দালিলিক প্রমাণ থাকতে হবে।’ সংশোধনীতে এটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, এখন যে সংশোধনী আনা হয়েছে, এর ফলে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ বিতরণের সক্ষমতা বেড়ে যাবে। দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে দাবি জানানো হচ্ছিল, তার প্রেক্ষিতেই এখন এটা করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের মোট আমানতের ১৫ শতাংশ বাধ্যতামূলক তারল্য সঞ্চিতি ব্যাংকে রাখার যে বিধান ছিল, সেটি কমিয়ে এখন ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠাগুলোর ঝুঁকি কিছুটা বেড়ে যাবে কি নাÑএমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, ঝুঁকি সেভাবে বাড়বে না। কারণ সবগুলো ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী এবং আদায়ের হার অত্যন্ত ভালো। ৯৮ শতাংশ আদায় হয়, বিশ্বের কোথাও এ ধরনের নজির নেই।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০