Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:30 pm

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছোট ব্যবসায়ী তথা কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন (পুনঃঅর্থায়ন স্কিম) করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ স্কিমের আওতায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে পারবে।

গতকাল এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, দেশের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বা সিএমএসএমই খাতে নিয়োজিত উদ্যোক্তাদের মাঝে সহজ শর্তে অর্থপ্রাপ্তির সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হলে তা জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকে অধিকতর গতিশীল করবে। সে লক্ষ্যে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের অপেক্ষাকৃত স্বল্প সুদে, মুনাফায় ও সহজ শর্তে ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে।

‘সিএমএসএমই খাতে মেয়াদি ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ নামে

অভিহিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে এ অর্থ সরবরাহ করা হবে। ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা আবর্তনশীল হিসেবে পরিচালিত হবে। প্রয়োজনে তহবিলের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে। প্রাথমিকভাবে স্কিমটির মেয়াদ হবে তিন বছর।

কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মেয়াদি ঋণ এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন প্রাপ্তির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন উদ্যোক্তা এবং যেকোনো দুর্যোগে (যেমনÑনদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, মঙ্গা, অগ্নিকাণ্ড, ভূমিকম্প, ভবন ধস, কভিড-১৯-এর মতো অতিমারি প্রভৃতি) ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবেন।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত মোট ঋণের ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে সামগ্রিকভাবে বিতরণ করতে হবে এবং সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা যাবে।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত মোট ঋণের ন্যূনতম ৭০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে এবং সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবসা খাতে দেয়া যাবে। খেলাপি ঋণগ্রহীতারা এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রাপ্য হবেন না। ঋণগ্রহীতার ঋণের শ্রেণিকরণ বিষয়ে সিআইবি থেকে নিশ্চিত হতে হবে।

অর্থায়নকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়িত অর্থের বিপরীতে বার্ষিক সুদের হার হবে দুই শতাংশ। এ স্কিমের আওতায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক পর্যায়ে আরোপিত বার্ষিক সুদের হার হবে সর্বোচ্চ সাত শতাংশ।

এ স্কিমের আওতায় প্রদত্ত ঋণের ক্ষেত্রে গ্রাহক পর্যায়ে গ্রেস পিরিয়ড হবে সর্বোচ্চ ছয় মাস। শিল্প/সেবা/ব্যবসার ধরনভেদে ঋণের মেয়াদ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত হবে। তবে গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি হবে না। পুনঃঅর্থায়নের মেয়াদ ঋণের মেয়াদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা হবে।

এ স্কিমের আওতায় তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের পরিচালকের (এসএমইএসপিডি) সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। সব রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক এই পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার আওতায় ঋণ দিতে পারবে।