নিজস্ব প্রতিবেদক: ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা খাতের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ট্রেডিং খাতের মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোগের সংজ্ঞা এবং ঋণসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে ক্ষুদ্র শিল্পে ২০ কোটি ও মাঝারি শিল্পে ৭৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই ও স্পেশাল প্রোগ্রাম ডিপার্টমেন্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, কুটিরশিল্প বলতে পরিবারের সদস্যদের প্রাধান্যভুক্ত সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ছাড়া স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লাখ টাকার নিচে এবং যা পারিবারিক সদস্যসহ অন্যান্য সদস্য সমন্বয়ে গঠিত এবং সর্বোচ্চ জনবল ১৫-এর অধিক নয়। কুটিরশিল্প খাতের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।
অন্যদিকে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ক্ষেত্রে মাইক্রো শিল্প বলতে সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লাখ থেকে ৭৫ লাখ টাকা কিংবা যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ১৬-৩০ জন বা তার চেয়ে কমসংখ্যক শ্রমিক কাজ করেন। সেবা শিল্পের ক্ষেত্রে মাইক্রো শিল্প বলতে সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লাখ টাকার নিচে কিংবা যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ১৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। ম্যানুফ্যাকচারিং খাতভুক্ত মাইক্রো শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা এবং সেবা খাতভুক্ত মাইক্রো শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।
ক্ষুদ্র শিল্পের সংজ্ঞায় বলা হয়, যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ৭৫ লাখ থেকে ১৫ কোটি টাকা কিংবা যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ৩১-১২০ জন শ্রমিক কাজ করেন। সেবা শিল্পের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র শিল্প বলতে সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা কিংবা যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ১৬-৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন। কোনো একটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে একটি কর্মকাণ্ড ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হলেও অন্য মানদণ্ডে সেটি মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে এ কর্মকাণ্ডটি মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। তবে তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান-শ্রমঘন শিল্পের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না। ম্যানুফ্যাকচারিং খাতভুক্ত ক্ষুদ্র শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা এবং সেবা খাতভুক্ত ক্ষুদ্র শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।
আবার যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১৫ কোটি টাকার অধিক এবং অনধিক ৫০ কোটি টাকা কিংবা যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ১২১-৩০০ জন শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন এবং তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান-শ্রমঘন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মাঝারি শিল্পে শ্রমিকের সংখ্যা সর্বোচ্চ এক হাজার জন ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ক্ষেত্রে ‘মাঝারি শিল্প’ বলতে সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে। তবে সেবা শিল্পের ক্ষেত্রে মাঝারি শিল্প বলতে সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ দুই কোটি থেকে ৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত কিংবা যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ৫১-১২০ জন শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। মাঝারি শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ৭৫ কোটি টাকা এবং সেবা খাতভুক্ত মাঝারি শিল্পের একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা যাবে।
এছাড়া ব্যবসা খাতে মাইক্রো উদ্যোগ বলতে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লাখ টাকার নিচে কিংবা যেসব প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ১৫ জন শ্রমিক কাজ করেন কিংবা যেসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা তাদের বুঝাবে। ক্ষুদ্র উদ্যোগের ক্ষেত্রে এই টাকার পরিমাণ স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ১০ লাখ টাকা থেকে দুই কোটি টাকা কিংবা ১৬-৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন এমন প্রতিষ্ঠান। কিংবা যেসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার এক কোটি টাকার অধিক কিন্তু ১২ কোটি টাকার বেশি নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এসএমই অর্থায়নের তথ্য ও ট্রেডিং খাতের মাইক্রো, ক্ষুদ্র এবং অন্যান্য উদ্যোগে বিতরণকৃত মোট ঋণের তথ্য পৃথকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমইএসপিডি বিভাগে দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।