শেয়ার বিজ ডেস্ক: গাজার বেশিরভাগ মানুষ রাফায় আশ্রয় নিয়েছেন। এখানেও যদি ইসরায়েল হামলা চালায়, তাহলে এত মানুষের প্রাণ যাবে, যা হবে এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নজিরবিহীন। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার একেবারে দক্ষিণে রাফা এলাকা থেকে কথাগুলো বলছিলেন এমাদ (৫৫)। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার মুখে উপত্যকাটির বেশিরভাগ বাসিন্দা এখন এই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে ক্ষুধা, আতঙ্ক আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত তারা। খবর: রয়টার্স।
এমাদ কথাগুলো বলেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি মন্ত্রী বলেছেন, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে হামাসকে নির্মূলে সফল হয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এবার আরও দক্ষিণে মিসর সীমান্তবর্তী রাফা এলাকায় অভিযান চালানো হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর সেদিন থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে তছনছ হয়েছে পুরো উপত্যকা। শুক্রবার পর্যন্ত সেখানে নিহত হয়েছেন ২৭ হাজার ১৩১ জন। শুক্রবার জানানো হয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ১১২ জন। যুদ্ধের প্রায় চার মাসে গাজায় আহত ব্যক্তির সংখ্যা ৬৬ হাজার ২৮৭। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
গাজার বাসিন্দা ২৩ লাখের মতো। হামলায় কোণঠাসা হতে হতে রাফায় বেশিরভাগ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। খাবার, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে শীতকাল, হচ্ছে বৃষ্টিও। সব মিলিয়ে রাফার লোকজন চরম হতাশার মধ্যে রয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএ।
শুধু রাফা নয়, শীত দুর্দশা বাড়িয়ে তুলেছে গাজার সব প্রান্তের মানুষের। তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেও নেমে যাচ্ছে। ইসরায়েলের হামলায় গাজা নগরী থেকে খান ইউনিসে পালিয়ে আসা উম বদরি নামের এক নারী বলেন, আগের শীতের দিনে আমরা বাসার ব্যালকনি থেকে বৃষ্টি উপভোগ করতাম। এখন বাসাটিও নেই। আর আমাদের আশ্রয় নেয়া তাঁবু বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাচ্ছে।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে কাতার ও মিসর। সম্প্রতি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি চুক্তি প্রস্তাব তৈরি করেছিল দোহা ও কায়রো। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সে প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়। এখন হামাসের পক্ষ থেকেও ইতিবাচক সাড়ার আশা করা হচ্ছে।