মো. রজব আলী, ফুলবাড়ী: কয়লা সংকটের কারণে গতকাল বন্ধ হয়ে গেছে দেশের একমাত্র কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। গতকাল রাত ৯টা ৪০ মিনিটে কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এতে বিদ্যুৎ সংকটে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে উত্তরবঙ্গের আট জেলার। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হাকিম শেয়ার বিজকে বলেছেন, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি কয়লা সরবরাহ করতে না পারায়, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলনকৃত কয়লার মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে গত ১৯ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মদ ও কোম্পানির সচিব (জিএম প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে প্রত্যাহার করেছে খনিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা। একই কারণে মহাব্যবস্থাপক (মাইনিং অ্যান্ড অপরেশন) এটিএম নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টার) খালেদুল ইসলাম দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। যদিও খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা সিসটেম লস। তাদের দাবি গত ২০০৭ সাল থেকে খনিটিতে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে, এ পর্যন্ত খনি থেকে এক কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস হয়েছে।
এদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেক্ট্রি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার বলেন, রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। এর মধ্যে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। কিন্তু কয়লা সংকটের কারণে গত এক মাস থেকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট বন্ধ থাকায় সেখান থেকে মাত্র ১৫০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ আসতো। এ কারণে গত এক মাস থেকে বিদ্যুতের কিছু ঘাটতি দেখা দেয়, এখন পুরোপুরি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ায় এ ঘাটতি আরও বাড়ল। তিনি বলেন, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হলেও বাহির থেকে বিদ্যুৎ এনে চাহিদা পূরণ করা হবে। তবে এতে বিদ্যুতের ভোল্টেজ কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে, এর সঙ্গে লোডশেডিং হতে পারে।
