মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: দীর্ঘদিন পর কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। গতকাল ব্যাংক খাত ছেড়ে এ খাতের শেয়ারে ঝুঁকতে দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের। মূলত এ খাতের কোম্পানির লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ায় কমেছে ব্যাংক খাতের কোম্পানির লেনদেন।
গতকালের লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪টি কোম্পানির মধ্যে এ খাতের কোম্পানি ছিল চারটি। তবে এ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা কম হওয়ায় মোট লেনদেনে এগিয়ে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। এ খাতটিও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান ছিল ৪৩ শতাংশ।
গতকাল দিন শেষে দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানির মোট লেনদেনে অবদান ছিল ২১ শতাংশ। ব্যাংকসহ অন্যান্য খাতের কোম্পানিতে ক্রেতার অভাব থাকলেও এ খাতে তেমনটি দেখা যায়নি। সারা দিনই ক্রেতার ভিড় দেখা যায় এ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে।
এ খাতে মৌলভিত্তি কোম্পানির সংখ্যা বেশি হওয়ার পাশাপাশি লভ্যাংশ প্রদানের হারও সন্তোষজনক। মূলত সে কারণেই সারা বছরই এ খাতের কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা যায়। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে অন্যান্য খাতের মতো দীর্ঘদিন থেকে বিবর্ণ রয়েছে এ খাতটিও। গতকাল যার ভিন্ন চিত্র দেখা যায়।
এদিকে দিন যতই যাচ্ছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিও তত কমে যাচ্ছে। প্রতিদিন করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়ানোর কারণে বাজারে আসতে চাচ্ছেন না বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী। অন্যদিকে বাজারের ভবিষ্যৎ কী হবে তা ভেবে ফোনে লেনদেনেও অংশ নিচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে লেনদেন ১০০ কোটি টাকার নিচে ঘুরপাক খাচ্ছে।
গতকাল ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে মোট ৬৯ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন। সার্বিক বাজার পরিস্থিতি নাজুক থাকায় গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক এক পয়েন্ট কমতে দেখা যায়। দিন শেষে সূচকের অবস্থান হয় তিন হাজার ৯৬০ পয়েন্টে।
এদিকে গতকালও ফ্লোর প্রাইসে আটকে গিয়ে দর বাড়তে দেখা যায়নি সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারের। লেনদেন হওয়া ২৩৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর অপরিবর্তিত ছিল ১৯৮টির। আর দর কমতে দেখা যায় ২১ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ফ্লোর প্রাইস খুবই দরকার। কিন্তু এভাবে চললে বিনিয়োগকারী টানতে ব্যর্থ হবে পুঁজিবাজার। কারণ আমাদের দেশের মানুষ এ বিষয়টিতে অভ্যস্ত নয়। তারা স্বাভাবিক বাজার দেখতে চাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন নীতি-নির্ধারকের। কীভাবে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিয়ে ও বাজার চিত্র স্বাভাবিক করা যায় এখন সেই পরিকল্পনাই চলছে।
