শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইসরায়েলের হামলায় বিপর্যস্ত ও অনাহারী গাজাবাসীর জন্য খাদ্য সহায়তা নিয়ে প্রথম জাহাজ পৌঁছেছে ভূখণ্ডটির উপকূলে। খবর: বিবিসি।
দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন গাজাবাসীর জন্য সহায়তা পৌঁছানোর মরিয়া চেষ্টার অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার ২০০ টন খাদ্যসামগ্রী নিয়ে সাইপ্রাস থেকে রওনা হয়েছিল স্প্যানিশ জাহাজ ‘ওপেন আর্মস’। ইন্টারনেটে পোস্ট করা কয়েকটি ভিডিওতে গাজা উপকূলের জেটিতে নোঙর করা জাহাজটি থেকে ক্রেন দিয়ে লরিতে ত্রাণের মালামাল বোঝাই করতে দেখা গেছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের জন্য সমুদ্রপথে সহায়তা পৌঁছাতে গাজা উপকূলে এই জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। ইসরায়েলের হামলার কারণে গাজায় আকাশ ও স্থলপথে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ায় সমুদ্রপথকে বেছে নেয়া হয়েছে। তারই প্রথম চেষ্টায় গাজা উপকূলে পৌঁছায় ওপেন আর্মস।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহায়তায় ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে) এই খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে চাল, ময়দা, লেবু, টিনজাত সবজি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার। গাজায় কার্যকর স্থায়ী কোনো জেটি না থাকায় ডব্লিউসিকে এই জেটি নির্মাণ করেছে। তবে সেখান থেকে খাদ্যসামগ্রী কীভাবে গাজাবাসীর কাছে পৌঁছে দেয়া হবে, তা জানা যায়নি।
ডব্লিউসিকের প্রতিষ্ঠাতা খ্যাতনামা শেফ হোসে আন্দ্রেস এক্সে লিখেছেন, জাহাজটি থেকে খাদ্যসামগ্রী ১২টি লরিতে বোঝাই করা হয়েছে। আমরা কাজটি করতে পেরেছি। পরবর্তী সময়ে সপ্তাহে কয়েক হাজার টন খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হবে কি না, সেটারই একটা পরীক্ষামূলক উদ্যোগ ছিল এটি।
এদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওপেন আর্মস ও এর কার্গো সাইপ্রাসেই পরিদর্শন করা হয়েছে। এরপর গাজা উপকূলের নিরাপত্তায় সেখানে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
ত্রাণ সরবরাহের এই সামুদ্রিক মিশন সফল হলে আন্তর্জাতিক সহায়তা নিয়ে আরও কয়েকটি জাহাজ একই পথ অনুসরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ওই অঞ্চলে পৌঁছাতে ত্রাণবাহী জাহাজগুলো নতুন একটি সমুদ্রপথ ব্যবহার করতে পারে।
এছাড়া সমুদ্রপথে সহায়তা পৌঁছাতে গাজা উপকূলে আলাদা একটি ভাসমান ডক তৈরির পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি তৈরি হলে দিনে ২০ লাখ মানুষের খাবার পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মনে করছে হোয়াইট হাউস। কিন্তু সামরিক একটি জাহাজ ডক তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে ওই পথে যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের কারণে সামাজিক শৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় গাজায় ত্রাণ বিতরণ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া গাজার নিজস্ব খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা বিশেষ করে খামার, বেকারি ও কারখানাগুলোর বেশিরভাগই হয় ধ্বংস হয়েছে, নয়তো বন্ধ হয়ে গেছে।