নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ, মার্কিন ভিসানীতির প্রভাবে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের খরা চলছে। কোনোদিন ৩০০ কোটির বেশি আবার কোনোদিন ৪০০ কোটির বেশি লেনদেন হচ্ছে। এতে বড় লেনদেনের মুখ দেখছে না পুঁজিবাজার। তবে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ওপর ভর করে এ খরা কাটিয়ে গতকাল বুধবার উত্থানে ফিরেছে পুঁজিবাজার। সক্রিয় হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরাও।
বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গতকাল ৭৯টি কোম্পানির শেয়ারের বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৬৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩৮টি কোম্পানির শেয়ারদর।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল বিবিধ খাতের ৯০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এদিন খাতটিতে মোট ১০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে নয়টির দর বেড়েছে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল আইটি খাতের শেয়ার। খাতটির ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এরপর ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। এ তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে চামড়া খাত, পাট খাত, সিমেন্ট খাত। গতকাল টেলিকমিউনিকেশন, সিরামিক, মিউচুয়াল ফান্ড ও আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধি বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় বিমা খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটির ৮৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। শেয়ারদর কমায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল জীবন বিমা খাত। খাতটির ৪০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। ২১ দশমিক পাঁচ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত।
অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২২ দশমিক ১ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে বিমা খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। নয় দশমিক ২৬ শতাংশ লেনদেন হওয়া ভ্রমণ খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইর তথ্য মতে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ৩ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক ৪ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৪১ পয়েন্টে।
এদিন বাজারে লেনদেন হওয়া ২৮১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৯টির। বিপরীতে কমেছে ৬৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
বাজারে ৭ কোটি ৭৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৪টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে; যা টাকার অঙ্কে ৪৩০ কোটি ৪০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৭২ কোটি ৪০ লাখ ৩৪ হাজার টাকার শেয়ার, বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ড।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রয়েল টিউলিপ সি পার্লের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল লাফার্জহোলসিমের শেয়ার। এরপর রয়েছে জেমিনি সি ফুড, দেশবন্ধু, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, মুন্নু এগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারিজ, এমারাল্ড অয়েল, বিডিকম এবং রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ২৬ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫১৬ পয়েন্টে। সিএসইতে ১২৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৬টির, কমেছে ৩১টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৫০টির শেয়ার।
দিনশেষে সিএসইতে ৮ কোটি ৮ লাখ ৬৫ হাজার ১১০ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৭ কোটি ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার ২৯০ টাকার শেয়ার।