নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের দাপটে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন ছাড়িয়েছে পাঁচশ কোটি টাকার ঘর। বেশ কয়েক দিন ধরে ৪০০ থেকে ৩০০ কোটির ঘরে ওঠানামা করছিল ডিএসইর লেনদেন। বেশিরভাগ সময় বিমা খাতের দাপট থাকে বাজারে। তবে গতকাল মঙ্গলবার সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত বাজারের চিত্র কিছুটা বদলে দিয়েছে। তাতে এদিন ৮ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে যায় প্রধান সূচক।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ৫৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এদিন খাতটিতে ১১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে তিনটির দাম। এরপর পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতের পাঁচটি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার বিপরীতে কোনো কোম্পানির শেয়ারদর কমেনি। এতে শেয়ারের দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় খাতটির ৮৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ কোম্পানি। এরপরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারদর। আটটি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে কোনো কোম্পানির দাম কমেনি।
গতকাল টেলিকমিউনিকেশন, সিরামিক ও করপোরেট বন্ডেরও আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধি বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিক্রির চাপ থাকায় বিমা খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটির ৯২ দশমিক ৬৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। শেয়ারদর কমায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। খাতটির ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এরপর ১৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত।
অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিমা খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে মোট ১১ দশমিক ৫৯ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। আট দশমিক ১৬ শতাংশ লেনদেন হওয়া বিবিধ খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইর তথ্য মতে, মঙ্গলবার ডিএসইতে ৩১৬টি প্রতিষ্ঠানের ৯ কোটি ৩৪ লাখ ৯৫ হাজার ১৫৯টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ডের হাতবদল হয়েছে। তাতে ডিএসইর লেনদেন হয়েছে ৫৭২ কোটি ২১ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৮৬ কোটি সাত লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
এদিন ডিএসইতে ৭৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৬৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৮ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ৩ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৬২ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক ১ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৩৮ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল জেমিনি সি ফুডের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল এপেক্স ফুটওয়্যারের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল সোনালী পেপারের শেয়ার। এরপর রয়েছে রয়েল টিউলিপ সি পার্ল, ফু-ওয়াং ফুড, কোহিনূর কেমিক্যাল, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন বেগ, দেশবন্ধু, সোনালী আঁশ এবং ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের শেয়ার।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক ২৫ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৫৬ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৪২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫টির, কমেছে ৩২টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৫টির।
দিন শেষে সিএসইতে ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৮১ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৯ কোটি ৮৪ লাখ ৯ হাজার ৬৩৩ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।