খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ জোর দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে এক টালমাটাল পরিস্থিতি পার করছে বৈশ্বিক অর্থনীতি। ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়ার আশঙ্কা করছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে দেশে যাতে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট দেখা না দেয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে এ কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ২০২৩ সাল বিশ্বের জন্য ‘সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ একটা বছর হতে পারে’ বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই সময়ে দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। সেই কথাটা মাথায় রেখে আমাদের এখন থেকেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং খাদ্য সংরক্ষণের কী ব্যবস্থা করা যেতে পারে বা প্রক্রিয়াজাত করা যেতে পারে, সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী অপচয় রোধে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হবে, সেগুলো যাতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করে গ্রহণ করা হয়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ভালোভাবে কস্ট-বেনিফিট অ্যানালিসিস হিসাব করতে হবে। যেসব প্রকল্পে দেরিতে সুফল পাওয়া যায় বা যেসব প্রকল্পের রেট অব রিটার্ন কম, সে ধরনের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ধীরে চলার নীতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় রাখতে চেষ্টা চালানোর কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে ‘প্রতিনিয়ত আলোচনা করার’ প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না। একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমি একটা অনুরোধ করব, সেটা হচ্ছে প্রতিনিয়ত আমাদের মূল্যস্ফীতি কত, সেটা নিয়ে আলোচনা করার খুব একটা প্রয়োজন নেই। কারণ অনেক দেশ এটা নিয়ে আলোচনা করে না। আমি যত আন্তর্জাতিক মিডিয়া দেখি, বিশেষ করে আমেরিকা বা ইউরোপ বা এসব দেশ, যারা সব সময় এসব নিয়ে বেশি চর্চা করে, তারা কিন্তু এগুলো নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করে না বা এটার প্রভাব কী হয়েছে, সেটা নিয়েও কথা বলে না। আমাদেরও বোধ হয় এটা নিয়ে খুব বেশি আলোচনার প্রয়োজন নেই।’

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একনেক সভায় যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার আওতায় যাতে থাকে, সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সেজন্য যা যা করণীয় সেটা আমরা করব।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের শাসনব্যবস্থা এমন যে, তারা জনগণ কী পেল বা না পেল, কিংবা কী খেল বা না খেল, সেটা নিয়ে অনেক সময় চিন্তা করে না। আমাদের কিন্তু তা নয়। সব সময় জনগণের প্রতি একটি দায়িত্ববোধ আমাদের আছে। আমরা সেটা অনুভব করি। আর সেভাবেই কাজ করতে চাই দেশের। সেটা আমরা করি।’

খরচে লাগাম দেয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটা পরিবারকেই আমি অনুরোধ করব সবাইকে সঞ্চয়ী হতে হবে। যে যেটুকু পারবে সঞ্চয় করে রাখতে হবে। এটা সরকারের জন্যও প্রযোজ্য। আমাদের সঞ্চয়টাও বাড়িয়ে রাখতে হবে। অহেতুক অর্থ ব্যয় করার প্রয়োজন নেই। যেটুকু প্রয়োজন, আমরা সেটুকু করব। কিন্তু তার বেশি নয়। সেই সুযোগটা নেই।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০