শেয়ার বিজ ডেস্ক: জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) খাদ্যের মজুত তলানিতে ঠেকে যাওয়া এবং অবরোধের কারণে নতুন সরবরাহ আসতে না পারায় কয়েক দিনের মধ্যে গাজা উপত্যকায় তীব্র খাদ্য সংকট শুরু হতে যাচ্ছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ইউনাইটেড নেশন হিউম্যানিটেরিয়ান অরগানাইজেশন (ইউএনএইচও)। খবর: সিএনএন ও আল জাজিরা।
গতকাল রোববার মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন ইউএনএইচওর মধ্যপ্রাচ্য শাখার করিন ফ্লেশার। জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, ডব্লিউএফপির একটি প্রতিনিধিদল গাজার বাসিন্দাদের দুই সপ্তাহ চলার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যের সরবরাহ নিয়ে সীমান্তে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
কলিন ফ্লেশার বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত সবুজ সংকেত পাইনি। আমরা সবাইকে বলেছি, আমাদের সীমান্ত পেরোনো দরকার এবং শরণার্থী শিবিরগুলোয় খাদ্যের সরবরাহ পৌঁছানোর জন্য নিরাপদ করিডোর প্রয়োজন। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। আমাদের হাতে সময় খুব কম। শিগগির সরবরাহ না পৌঁছালে গাজায় ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে।
প্রসঙ্গত, দারিদ্র্য ও বেকারত্বপীড়িত গাজা ভূখণ্ডে বসবাসকারী ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে অন্তত পাঁচ লাখ ২৯ হাজার ফিলিস্তিনি জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তার ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেই সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণের বেশি।
এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর ফিলিস্তিন রিফিউজিস ইন নিয়ার ইস্ট (ইউএনআরডব্লিউএ) বলেছে, অবরুদ্ধ গাজা অধিবাসীদের জন্য পানি ‘জীবন-মরণের বিষয়’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরাইল পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় উপত্যকার মানুষ বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
সংস্থাটি জানিয়েছে, পানি শেষ হয়ে গেছে। এর প্রভাবে ২০ লাখের বেশি মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছেন। ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, গাজায় পানি জীবন-মরণের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০ লাখ মানুষের জন্য পানির ব্যবস্থা করতে এখনই গাজায় জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে। কারণ বিদ্যুতের অভাবে ওয়াটার প্ল্যান্ট ও পাবলিক ওয়াটার নেটওয়ার্ক বন্ধ।
ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ গত বুধবার থেকে গাজায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেছে, যে কারণে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিশুদ্ধ পানির অভাবে ফিলিস্তিনিরা এখন কূপের নোংরা পানি ব্যবহার করছে। এতে পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, যা গাজা অধিবাসীদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
