শেয়ার বিজ ডেস্ক: দুর্ভিক্ষের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা। সেখানে চার লাখ ৯৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। খবর: আল জাজিরা।
ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে একদিকে খাবার নিয়ে ত্রাণবাহী গাড়ি অপেক্ষা করছে। অন্যদিকে তীব্র ক্ষুধায় ছটফট করছে গাজার ছোট শিশু, নারী, পুরুষ ও বয়স্ক মানুষ।
ত্রাণসামগ্রী নিতে যাওয়া লোকজনের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি ত্রাণবাহী গাড়ি ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থাও হামলার শিকার হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। ট্রাকে করে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিয়ে অপেক্ষায় থাকার পরও শিশুরা অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় মারা যাচ্ছে। ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলায় ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ সহায়তায়ও পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
প্রায় আট মাস ধরে গাজায় সংঘাত চলছে। এই পুরোটা সময়ের মধ্যে কয়েকবার মাত্র ত্রাণবাহী গাড়ি গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। বাইরে থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এবং ক্রমাগত হামলা চলতে থাকায় গাজায় ভয়াবহ বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। ছোট শিশুরা খাবারের অভাবে এবং তীব্র পুষ্টিহীনতায় মারা যাচ্ছে।
একদিকে দফায় দফায় বোমা হামলা, অন্যদিকে খাদ্য সংকট, বাসস্থানের সংকট, একটু মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবÑসবকিছু মিলিয়ে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের শেষ নেই। কবে এই পরিস্থিতি ঠিক হবে, তা কারও জানা নেই।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপ বাড়তে শুরু করেছে। গাজার শিশুরা লাইনে দাঁড়িয়ে বিশুদ্ধ পানির জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও সামান্য পানির ব্যবস্থা হচ্ছে না। পানির এমন তীব্র সংকটের কারণে হাজার হাজার পরিবার এখন সাগরের নোনা পানিই ব্যবহার করতে শুরু করেছে। উত্তর গাজার উত্তর গাজা ইমার্জেন্সি কমিটি জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় অবরুদ্ধ এই উপত্যকার সব কূপ ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে সেখানে পানির সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপর গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে অভিযানের নামে গত আট মাসে কমপক্ষে ৩৭ হাজার ৬২৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ নারী এবং শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৮৬ হাজার ৯৮ জন।
এদিকে আল-শাতি ক্যাম্পে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়েহের বোনসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন।