Print Date & Time : 27 June 2025 Friday 9:20 am

খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে সরকারকে বাধ্য করব: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির আন্দোলনে দলের একজন নেতাকর্মীও ঘরে বসে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই কথাÑখালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করবই। সরকারকে বাধ্য করব তাকে মুক্তি দিয়ে জনগণের সব অধিকার ফিরিয়ে দিতে। এটাই এখন বিএনপির একমাত্র কাজ।’

গতকাল খালেদা জিয়ার কারাবন্দির দুবছর উপলক্ষে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে, নেতাকর্মীরাও লড়াই-সংগ্রাম করছেন। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবই। তার মুক্তির দাবিতে আগামী শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না। তিনি কিছুই খেতে পারেন না, কমপক্ষে ছয় থেকে সাত কেজি ওজন কমে গেছে।’ সরকার অর্থনীতিকে তছনছ করে দিয়ে নিচের দিকে নামিয়ে দিয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটি আমার কথা নয়, অর্থমন্ত্রীর। যিনি একদিন আগে বললেন, সব সূচকে দেশ ঊর্ধ্বগতিতে। তার পরদিন বললেন, অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। আমার তো সন্দেহ হচ্ছে এখন তার চাকরি থাকে কি না। এ কথা বলার পর তার চাকরি থাকার তো কথা নয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের গার্মেন্টশিল্প ভালো নেই। দুর্নীতি বন্ধ নেই। দুর্নীতির জন্য সমানে মেগা প্রজেক্ট করেছে। দুর্নীতির জন্য বিদ্যুৎ, গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। দুর্নীতির জন্য ক্ষমতাসীনরা যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাদের বাদ দিতে বাধ্য হয়েছে। গ্রেফতার করতে হয়েছে। আমাদের গ্রেফতার করতে হয়নি।’

দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে চায় না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের শপথ নিয়েছিল। ৭৫ সালে তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল। আজ এরই ধারাবাহিকতায় ভিন্ন পদ্ধতিতে তা করছে।’ তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দানব সরকারকে পরাজিত করতে হবে। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।’

মাত্র ১৫ শতাংশ ভোট দিয়ে জনগণের প্রতিনিধি হওয়া যায় না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৫০ শতাংশের নিচে কম ভোট পড়লে সেটা নির্বাচন বলে গণ্য করা হয় না। নির্বাচনের ফল বাতিল করে নতুন করে জনগণের ভোটে মেয়র নির্বাচিত করতে হবে।’ না হলে জনগণের উত্তাল আন্দোলন থেকে সরকার মুক্তি পাবে না বলেও তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

এদিকে সরকারের উদ্দেশে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘কথা একটাই যদি সোজা আঙুলে ঘি না ওঠে, তাহলে আমরা আঙুলটি বাঁকা করব। আপনাদের আর সময় বেশি দেব না। এখনও সময় আছে, মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছেড়ে দিন,  ছেড়ে দেন। অনুরোধ করছি।’

সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য একত্রিত হয়ে শপথ নিতে হবে বলে জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ‘মানসিকতা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে পারব না। তা যত বড় বড় কথাই মাইকের সামনে বলি না কেন।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা সভায় বক্তব্য দেন।