নিজস্ব প্রতিবেদক: হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হাসপাতালের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আসছেন। আজ বুধবার তাদের ঢাকায় এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলে বিএনপি সূত্রে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই বিদেশি চিকিৎসকদের আসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ঢাকার চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বিদেশি চিকিৎসক আনার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের তিন চিকিৎসকের আসার অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানিয়েছেন, ঢাকায় মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকের মাধ্যমে রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের যে চিকিৎসকদের সঙ্গে তারা এত দিন সমন্বয় করছিলেন, তাদের মধ্য থেকে এখন আগামীকাল যুক্তরাষ্ট্রের তিন চিকিৎসক ঢাকায় আসবেন।
এদিকে খালেদা জিয়াকে গতকাল করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) প্রায় আট ঘণ্টা রাখার পর আবার কেবিনে নেয়া হয়েছে। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত ৯ আগস্ট থেকে আড়াই মাস ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।
চিকিৎসক জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক কিছু জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তাকে কেবিন থেকে আজ ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছিল। এরপর তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা কিছুটা কমলে আট ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আবার কেবিনে নেয়া হয়েছে।
এবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় এর আগে চার দফায় খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছিল।
৯ অক্টোবর বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলনে করে জানিয়েছিলেন, ‘খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে। খালেদা জিয়ার যে অবস্থা, তাতে তাকে বাসায় নেয়া যাবে না। এখানকার চিকিৎসকরা তাদের সাধ্য অনুযায়ী যা করার, করেছেন। এখন তাকে বিদেশে নিতেই হবে। এতে তার জীবন রক্ষা পেতে পারে।
বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হƒদ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা দেয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সরকার সে আবেদন নাকচ করে দিয়েছে।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হƒদদুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।