নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী সংসদ নির্বাচনে আইন অনুসারে দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল দুপুরে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজদের ৪৭তম বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপির মহাসচিব নানা সময়ে বলছেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এবং তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে কোনো ছাড় দেবে না বিএনপি সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, দুর্নীতির মামলায় দুই বছর বা তার অধিক সাজা হলে সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে পারবেন না। তিনি (খালেদা জিয়া) আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত। আমার মনে হয়, বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল অনেক দেশীয় আইন মানেন না। তাদের পক্ষে এ রকম কথা বলাটা যে খুব একটা সারপ্রাইজিং, তা নয়। আমার কথা হচ্ছে, দেশে যে আইন আছে, সে আইনে যদি তিনি যোগ্য হন, তাহলে নির্বাচন করবেন। তিনি যদি অযোগ্য হন, তাহলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না।
খালেদা জিয়ার আপিল বিচারাধীন রয়েছে, কিন্তু তারা শুনানির উদ্যোগ নিচ্ছেন নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, তারা কী করবেন না করবেন, আমি কি সেজন্য তাদের উপদেশ (অ্যাডভাইস) দেব? তারা আপিল শুনানির উদ্যোগ নিচ্ছেন না, তার কৈফিয়ত আমাকে দিতে হয়, এটা তো যৌক্তিক নয়।
খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না এমন আরেক প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, আইনে যা বলে তা-ই হবে। আমার কথার সারমর্ম হচ্ছে এই, আইনে যদি বলে তিনি করতে পারবেন, তাহলে তিনি করতে পারবেন। কিন্তু আইনে যদি বলে তিনি করতে পারবেন না, তাহলে তিনি করতে পারবেন না। আপাতত যে আইন আছে, তাতে মনে হয় না যে তিনি করতে পারবেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডিত সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি ছিলেন। এর মধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে পরিবারের সদস্যদের আবেদনে সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেয় সরকার। এরপর খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশান অ্যাভিনিউয়ের নিজের বাসভবন ফিরোজায় যান। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সবশেষে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাসের জন্য মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
প্রতিবার একই শর্তে তাকে কারাগারের বাইরে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী, মুক্ত থাকার সময় খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন না।