নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের আবেদন পর্যালোচনার পর দ্রুত মতামত দিয়ে ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে ‘সময় শেষ হয়ে যাওয়ায়’ বৃহস্পতিবার (গতকাল) আর সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আইন মন্ত্রণালয়ে খালেদার পরিবারের আবেদনের বিষয়ে দাপ্তরিক কাজ শেষে এদিন বিকালে মন্ত্রীর গুলশানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নথি নিয়ে যান আইন সচিব গোলাম সারওয়ার। এরপর আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা ও দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছিল। দুটি নির্দিষ্ট শর্তে তাকে সাময়িকভাবে মুক্ত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু এখানে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা সম্পাদন হয়ে গেছে, এরপর এটাকে আবার ওপেন করার স্কোপ আছে কি না, সেটা দেখে আমাদের অভিমত যথা শিগগির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যাওয়ার পর গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলে পরিবারের আবেদনে সরকার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে তাকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। ৭৬ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সে সময় শর্ত দেয়া হয়, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে ও তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
এখন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার। বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বুধবার রাতে ওই আবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাতেই তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় মতামতের জন্য।
আইনমন্ত্রী বলেন, যে শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয়েছিল, তা শিথিলের সুযোগ আছে কি না, তা এখন তারা দেখবেন। বিষয়গুলো দেখার পর এ বিষয়ে মতামত দেবেন বলে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিষয়টি সরকার মানবিকভাবেই দেখছে।’
খালেদা জিয়াকে অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি কী হবে, তা আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা মতামত দিলে সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সামারি হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে। মন্ত্রী মহোদয় (আইনমন্ত্রী) সিদ্ধান্ত দিলে, তখন বাকিটা হবে।’
ওই আবেদনে খালেদা জিয়াকে কোন দেশে নিতে চাওয়া হয়েছেÑজানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘না, তারা কোনো দেশ উল্লেখ করেননি। শুধু চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কথা বলেছেন। আর কিছু বলেননি।’