নিজস্ব প্রতিবেদক: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে তাকে জেলে ফিরে ‘নতুন করে’ আবেদন করতে হবে। গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে সরকার তাকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দিয়েছে। এখন আর শর্ত বদলে সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার ‘সুযোগ নেই’।
এখন খালেদা জিয়া ‘নতুন করে একটি আবেদন করলে’ তার ওপর আলোচনা হতে পারে বলে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এখানেও বলছি, সংসদেও বলেছি। শর্তযুক্ত শর্তে তিনি সাজা স্থগিতে যে মুক্তি পেয়েছেন, সেটি যদি না মেনে আবার জেলে যেতে চান, সেটাও হতে পারে। কিন্তু এই অবস্থায় ফৌজদারি কার্যবিধির কোথাও নেই যে তাকে আমরা আগের দরখাস্ত বিবেচনা করে বিদেশ যাওয়ার সুবিধা করে দিতে পারি, সেটা নেই। কারণ বিদেশে পাঠানোর শর্ত আগের নিষ্পত্তি হওয়া দরখাস্তে ছিল না।’
৭৬ বছর বয়সী এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। সর্বশেষ গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার ‘সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেই’ বলে দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই। সাময়িক মুক্তির শর্তের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করা হয়। এবার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আবারও সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মতামত দিয়ে এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সেখানে আগের মতোই বলা হয়েছে, খালেদা জিয়াকে অনুমতি দেয়ার ‘আইনি সুযোগ নেই’।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতিতে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্রাব) এ বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ নিয়েও সাংবদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন আইনমন্ত্রী। এ নিয়োগে কোনো বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কি নাÑএমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘দুটি বিষয়ে কখনও রাষ্ট্রপতিকে কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারেন না; এটা তার সর্বময় ক্ষমতাÑএক. প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা এবং দ্বিতীয়ত, বিচারপতি নিয়োগ করা।
যে কাজটা রাষ্ট্রপতির, সেটি আমি কী করে বলব! আমি তো সরকারের মন্ত্রী। বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি তার সুবিবেচনা ও আইন অনুযায়ী ক্ষমতার প্রয়োগ করে যা ভালো মনে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমি মনে করি, আপিল বিভাগে অনেকেরই প্রধান বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। আর সরকারে এসব নিয়ে কোনো চিন্তাই নেই।
অন্যদের মধ্যে র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।