নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা বাতিলের জন্য আপিল বিভাগে গিয়েও সাড়া পাননি। হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার ওই আবেদন খারিজ হওয়ার পর তিনি আপিলের অনুমতি চেয়েছিলেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ গতকাল রোববার তা খারিজ করে দেওয়ায় হাইকোর্টের আদেশই বহাল থাকলো।
এর ফলে ঢাকার দুই নম্বর বিশেষ জজ হোসনে আরা বেগমের আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানি পর্যায়ে থাকা এ মামলার কার্যক্রম চলতে আর কোনো আইনি বাধা থাকলো না।
আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা চলবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অব চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইমপোট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে।
খালেদা মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেওয়া হয়। হাইকোর্টের ওই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় বিচার আটকে যায়।
সাত বছর পর সেই রুলের শুনানি করে ২০১৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তা খারিজ করে দেন বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওই রায়ে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হলে এ মামলা বিচারের বাধা কাটে।
ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০১৬ সালের ২৫ মে প্রকাশিত হলে খালেদা জিয়া ওই বছর ২৬ জুন লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন।
তার যুক্তি ছিল, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আনা অভিযোগের মধ্যে দুদক আইনের ৫(২) ধারার কোনো উপাদান নেই। যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও আইনগতভাবে এ মামলা চলে না। কিন্তু তার ওই যুক্তি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে টেকেনি। ফলে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর সামনে আগামী ১০ জুলাই আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির হওয়ার কোনো বিকল্প থাকছে না।
Add Comment