গত চার বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় খুলনার রূপসা নদীতে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী খুলনা নৌকাবাইচ। এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ৩৪টি দল। উৎসবের আয়োজক ছিল খুলনা নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (এনএসএসকে)। তত্ত্বাবধানে ছিল খুলনা জেলা প্রশাসন।
প্রতিযোগিতার দিন সকাল ১০টায় নগরীর আপামর মানুষের অংশগ্রহণে শিববাড়ী থেকে শহীদ হাদিস পার্ক পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী এ উৎসব। দুপুর ২টায় রূপসা নদীর ১নং কাস্টম ঘাটে অতিথিরা ফেস্টুন ও বেলুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করবেন। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে শেষ হয়। প্রতিযোগিতাটি ১নং কাস্টম ঘাট থেকে শুরু হয়ে খানজাহান আলী সেতুতে (রূপসা সেতু) গিয়ে শেষ হয়।
প্রতিযোগিতায় কয়রা, পাইকগাছা, তেরখাদা, কালিয়া, নড়াইল, মাদারীপুর থেকে ১৫টি বড় ও ১০টি ছোট বাইচ দল অংশ নেয়। এর মধ্যে বড় দলের প্রথম বিজয়ীরা পান এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় দল ৬০ হাজার টাকা ও তৃতীয় দল পায় ৩০ হাজার টাকা। ছোট দলের প্রথম বিজয়ী দল ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় দল ৩০ হাজার টাকা ও তৃতীয় দল পায় ২০ হাজার টাকা। এবার গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফরিদপুর এলাকার ১২টি বাচারি নৌকা নিয়ে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়। সে দলের প্রথম বিজয়ী পান ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় দল ৩০ হাজার টাকা ও তৃতীয় দল পায় ২০ হাজার টাকা।
বাইচ প্রতিযোগিতার পাশাপাশি আয়োজন করা হয় ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা। গ্রামীণফোন গ্রাহকরা খুলনা নৌকাবাইচের ছবি ড়িনিড়ী-এ শেয়ার করে আকর্ষণীয় পুরস্কার জেতার সুযোগ পান।
গ্রামীণফোনের খুলনা সার্কেল প্রধান মো. আওলাদ হোসেন বলেন, গ্রামীণফোন সবার ভালোবাসার বিনিময়েই হয়ে উঠেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। আমরা সব সময়ই দেশের আনন্দ-বেদনার সঙ্গে থেকেছি। এই ধারাবাহিকতায় খুলনাবাসীকে একটি আনন্দঘন দিন উপহার দেওয়ার জন্যই আমরা বাইচ প্রতিযোগিতার সহযোগী হই।
নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি মোল্লা মারুফ রশীদ বলেন, আমরা সব সময় খুলনা নৌকাবাইচকে সফল করে তুলতে চাই।
নৌকাবাইচ নির্বিগ্নে পরিচালনার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেদিন। বাইচের দিন সকাল ১০টা থেকে ১নং কাস্টম ঘাট, নতুনবাজার লঞ্চঘাট ও রূপসা ফেরিঘাটে যাত্রী পারাপার বন্ধ ছিল। নিরাপত্তা রক্ষার্থে পুরো এলাকায় আইন রক্ষাকারী বাহিনী নিযুক্ত ছিল। বিশেষ প্রয়োজনে মেডিক্যাল টিম ও ফায়ার সার্ভিস দল উপস্থিত ছিল। রূপসা ব্রিজে কোনো গাড়ি পার্ক করা যায়নি সেদিন। ব্রিজে শুধু মহিলা ও শিশুরা অবস্থান করে।