শীত প্রায় জেঁকে বসেছে। গ্রামের তুলনায় শহরে একটু কম। শহরে এর তীব্রতা টের পাওয়া যাচ্ছে ভোররাতে। ধীরে ধীরে এর প্রকোপ আরও বাড়বে। এ সময় সর্দি, কাশি, জ্বর বা নানা ধরনের ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন অনেকে। তাছাড়া শীতের বৈরী আবহাওয়া ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি অনেক সময় ত্বকে নানা ধরনের জীবাণুও আক্রমণ করতে পারে।
সুস্থ থাকার জন্য ঋতুর এ পরিবর্তনে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, শীতকালে দেহের বহিরাংশের যত্নের পাশাপাশি দরকার ভেতরের সুস্থতাও। কিছু খাবার শরীরকে সুস্থ রাখে। সজীব করে দেহমন। এমন কয়েকটি খাবার
স্যুপ
শীতে শরীর সুস্থ রাখতে স্যুপ দারুণ উপকারী। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় যদি গরম স্যুপ খাওয়া যায়, তাহলে উষ্ণ থাকবে শরীর। শীতের বিকাল কিংবা রাতের খাবারে ধোঁয়া ওঠা এক বাটি স্যুপ ঠাণ্ডার রেশ কাটিয়ে দেবে নিমিষে। তাই শরীর সুস্থ রাখতে এ সময় নানা ধরনের সবজি, মুরগির মাংস অথবা ডিম দিয়ে স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন।
টক ফল
এ সময় দেহে ভিটামিন ‘সি’, ফাইবার বা আঁশের ঘাটতি দেখা যায়। এছাড়া শীতে প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। এসব ঘাটতি মেটাতে বেশি করে টকজাতীয় ফল খাওয়া উচিত। কমলা, বরই, পেয়ারা, আমলকি প্রভৃতি ফল ভিটামিন ‘সি’-র দারুণ উৎস। পেয়ারায়ও অধিক পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে, যা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। বরইয়ে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি উপাদান রয়েছে। এসব ফল শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
মূলজাতীয় সবজি
শীতকালীন রোগবালাই দূরে রাখতে মৌসুমি মূলজাতীয় সবজি দারুণ কার্যকর। বিট, মিষ্টি আলু, গাজর, শালগমের মতো নানা সবজি শীতে শরীর সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। এসব সবজিতে থাকা ভিটামিন ও নানা পুষ্টি উপাদান শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ানো ও খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতেও সাহায্য করে। এছাড়া এসব সবজি শীতকালে শরীরের উষ্ণতা বাড়াতে সাহায্য করে।
পালং শাক
শীতে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও শরীর সুস্থ রাখতে পালং শাক বেশ উপাকারী। পুষ্টিতে ভরপুর এ শাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যানসার প্রতিরোধী উপাদান রয়েছে। এসব গুণের কারণে এটি ‘সুপারফুড’ হিসেবে পরিচিত। সবুজ পাতার এ শাক দ্রুত পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এ শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লৌহ। শীতে রক্তস্বল্পতার হার বেশি, তাই এ সময় কার্যকর ভূমিকা রাখে পালং শাক।
মাছ ও শিম
শীতে বেশি করে মাছ ও শিম খেতে পারেন, উপকৃত হবেন। আমিষ ও প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে মাছ ও শিম খেতে হবে। পারলে সামদ্রিক মাছও খেতে পারেন। শিমে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, আঁশ, ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। অনেকে মাছ-মাংস খেতে চান না, তাদের জন্য শিমের বীচি বিশেষ উপকারী শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারে। তাছাড়া এ শীতে নিয়মিত শিম খেলে ত্বকও ভালো থাকে।