শেয়ার বিজ ডেস্ক: খোলা বাজারে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। এতোদিন নগদ ডলার ১২০ টাকা বিক্রি হলেও আজ মঙ্গলবার তা বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকায়। অথচ একদিন আগেও এর দাম ছিল ১২১-১২২ টাকা। সংশ্লিষ্টরা জানান, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ডলারের দাম বেড়েছে। আবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে তৈরি হওয়া সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে ডলারের সরবরাহ কম বলে জানান তারা।
এদিকে প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় শীর্ষ একডজন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডেকে প্রবাসী আয় বাড়াতে জোর দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো প্রতি ডলার ১১৭-১১৮ টাকা দরে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করে আসছিল। প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার তাদের কিছুটা বাড়তি দাম দিয়ে হলেও আয় বৈধ পথে আনতে বলা হয়েছে। ডলারের কম দামের কারণে ব্যাংকের মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয় যাতে হুন্ডিতে চলে না যায়, সেদিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। এখন তা ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে।
আইএমএফের পরামর্শে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৮ মের ডলারের দর নির্ধারণের নতুন পদ্ধতি ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করে। এর মাধ্যমে এক লাফে প্রতি ডলারে ৭ টাকা বাড়িয়ে মধ্যবর্তী দর ঘোষণা করা হয় ১১৭ টাকা। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ডলারের দর নির্ধারিত ছিল ১১০ টাকা। এর পর থেকে রেমিট্যান্স দ্রুত বাড়ছিল। ব্যাংকে ডলারের দর ১১৭ থেকে ১১৮ টাকায় স্থিতিশীল ছিল। খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছিল ১২০ টাকায়। এর আগে যা ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা ছিল।
ফকিরাপুলের একটি মানিচেঞ্জারের কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, আজ তারা ১২৫ টাকায় ডলার বিক্রি করেছেন। গতকাল সোমবার তারা ১২১ টাকা ৬০ থেকে ৭০ পয়সায় ডলার কিনে বিক্রি করেছেন ১২২ টাকা। টানা ৫ দিন পর গত বুধবার অফিস খোলার পর ডলারের বাড়তি চাহিদার কারণে দর বাড়তে শুরু করে। ওই দিন তারা ১২১ টাকা থেকে ১২১ টাকা ১০ পয়সায় কিনে বিক্রি করেন ১২১ টাকা ৫০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে আজ এ পর্যায়ে উঠেছে। সরবরাহ কম থাকায় ডলারের দর বাড়ছে বলে জানান তিনি
গত মে ও জুন মাসের পর চলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ব্যাংকিং চ্যানেলে রেকর্ড রেমিট্যান্স আসছিল। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তিন দিনের সাধারণ ছুটিসহ ৫ দিন ব্যাংক বন্ধ ছিল। এর পর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধীরগতি দেখা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ১ থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৩৭ কোটি ডলার। ৭ থেকে ১৩ জুলাই এসেছে ৬০ কোটি ৮১ লাখ ডলার। ১৪ থেকে ২০ জুলাই এসেছে ৪৫ কোটি ডলার। এই সাত দিনে গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার। আর ২১ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত এসেছে ১৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। চতুর্থ সপ্তাহ গড়ে তা এসেছে ১ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। অর্থাৎ তৃতীয় সপ্তাহের চেয়ে চতুর্থ সপ্তাহ রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ৬৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।