নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র এক দিনের ব্যবধানে খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের দাম ৪ টাকা বেড়ে ১২৪ টাকা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মানি এক্সচেঞ্জে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১২৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক দিন আগে অর্থাৎ গত মঙ্গলবার ডলার দর ছিল ১১৯-১২০ টাকা। যদিও নির্ধারিত দাম অনুযায়ী খুচরা ডলারের দাম ১১৩ টাকার বেশি হওয়ার কথা না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশির ভাগ মানি চেঞ্জারের কাছে ডলার নেই। যাদের কাছে আছে তারাও সরাসরি ডলার বিক্রি করছে না। পরিচিত কারও মাধ্যমে ডলার বিক্রি করছেন।
মতিঝিল দিলকুশার মনি এক্সচেঞ্জারে বিক্রেতা জানান, ডলারের অনেক সংকট। এক দিনে রেট বেড়েছে তিন থেকে ৪ টাকা। আজকে (গতকাল) কোনো গ্রাহক ডলার বিক্রি করতে আসলে রেট দিয়েছি ১২২ টাকা থেকে ১২২ টাকা ৫০ পয়সা। আর যারা কিনেছে তাদের কাছ থেকে নিয়েছি প্রতি ডলার ১২৩ থকে ১২৪ টাকা। অর্থাৎ চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের নগদ প্রতি ডলার কিনতে গুনতে হচ্ছে ১২৪ টাকা।
অপরদিকে ইসমাইল মানি এক্সচেঞ্জের এক কর্মকর্তা বলেন, ডলার দেয়া যাবে। তবে রেট বেশি। ১২৪ টাকা হলে নিতে পারবেন। দাম বেশি কেন জিজ্ঞেস করার সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দেন।
এদিকে ডলার সংকটের কারণে দিশেহারা ব্যাংক। আগের দেনা শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো হঠাৎ করে ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম। ফলে অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে ১২২ থেকে ১২৪ টাকায় কিনতে হচ্ছে। দেশের ব্যাংকগুলো তা প্রতিযোগিতা করে কিনছেও।
গত ১ নভেম্বরের বাফেদা ও এবিবির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর আমদানি দায় পরিশোধে ডলারের দাম ১১১ টাকা। আর প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের ঘোষিত দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। তবে গত মঙ্গলবার বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ব্যাংকগুলো ১২২ থেকে ১২৪ টাকায় ডলার কেনায় গতকাল জরুরি সভা ডেকেছিল এবিবি ও বাফেদা। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় এখন থেকে রেমিট্যান্সে প্রণোদনাসহ সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা দিতে পারবে। আর রপ্তানি আয়ে গ্রাহক ব্যাংকের সম্পর্কের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১১৩ থেকে ১১৪ টাকা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চের পর থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেয়া হয় এবিবি ও বাফেদাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় তারা সভা করে ডলারের রেট নির্ধারণ করে আসছে।