নিজস্ব প্রতিবেদক: পাগলা ঘোড়ার মতোই ছুটছে খোলাবাজারে ডলারের দাম। এক দিনের ব্যবধানে চার টাকা বেড়ে দেশের ইতিহাসে গতকাল সর্বোচ্চ ১১৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ হাউসের কার্যক্রম স্থগিত এবং দামে কারসাজির অভিযোগ নিয়ে ছয়টি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে সরিয়ে দেয়াÑকোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। গতকাল মতিঝিল এলাকায় খোলাবাজার মানি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
মানি এক্সচেঞ্জ হাউস ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের অনেকের কাছে নগদ ডলার নেই। কারও কাছে কোনো ক্রেতা এলে যেসব হাউসে নগদ ডলার আছে তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে ক্রেতাকে সরবরাহ করা হয়।
গতকাল কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে নগদ ডলার কিনতে গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা। গত ২৭ জুলাই খোলাবাজারে ডলারের দর উঠেছিল ১১২ টাকা। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারির পর কয়েক দিন সেখান থেকে কিছুটা কমে ১০৮ টাকায় থিতু হয়। কিন্তু চলতি সপ্তাহ থেকে আবার শুরু হয় ঊর্ধ্বগতি। গত সোমবার খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয় ১১৫ টাকা ৬০ পয়সায়।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দর থেকে ২৫ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে মার্কেটে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর চাহিদা মেটাতে ৯৫ টাকায় রিজার্ভ থেকে আরও ১১৯ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দরে ডলার মিলছে না ব্যাংকেও। ব্যাংকের আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সেও দর অনেক বেড়েছে।
খোলাবাজারে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানীর বিভিন্ন মানি চেঞ্জারে অভিযান শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এ পরিদর্শন কার্যক্রম চালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডলার কারসাজির অভিযোগে গত সোমবার দে?শি-বি?দে?শি ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণ কর?তে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলোÑবেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সি?টি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
এ ছাড়া ডলারের কারসা?জি রো?ধে খোলাবাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউসগু?লো?তে ধারাবা?হিক অভিযান পরিচালনা ক?রছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত সপ্তাহ পর্যন্ত কারসাজির অপরাধে পাঁচ মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪২টিকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নি?তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।
