Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 2:40 am

খোলাবাজারে সরকার-নির্ধারিত দামে মিলছে না তেল-চিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে খোলাবাজারে কেজি বা লিটারে পাঁচ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে তেল, চিনিসহ অন্যান্য পণ্য। তবে দুই সপ্তাহ ধরে এই দামে কোনো পরিবর্তন নেই বলে জানান দোকানিরা। এদিকে টানা তিন সপ্তাহ ধরে অস্থির ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার এখন ২৪০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর হালিপ্রতি ডিমের দাম ৪৮-৫০ টাকা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, টিসিবির মূল্যতালিকায় এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের মূল্য ১৮৫ টাকা হলেও খোলাবাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। চিনির মূল্য ১১০ থেকে ১২০ টাকা নির্ধারণ করা থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১৩০ টাকা দরে। এছাড়া চিকন দানার লবণের দাম গত এক মাসের ব্যবধানে প্যাকেটে বেড়েছে চার টাকা।

তেল, লবণ ও চিনি ছাড়াও অনেক পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রেও মানা হচ্ছে না সরকার-নির্ধারিত দাম। দোকানগুলোয় টানানো নেই মূল্যতালিকা। এ বিষয়ে দোকানিদের জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

এদিকে রমজান মাস সামনে রেখে বাড়তে শুরু করেছে বুট ও ছোলাজাতীয় পণ্যের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে দুই থেকে চার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এসব পণ্যের দাম। ছোলা খোসাসহ ৯০ এবং খোসা ছাড়া ১০০ টাকা। এছাড়া অ্যাংকর ডাল পাঁচ টাকা বেড়ে ৭৫ টাকা, কোথাও ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খেসারি ডাল ৮৫ টাকা। মুগ ডাল ১৫০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ১৩৫ টাকা। বেসন ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাসখানেক স্থির থাকার পর আবারও মাছের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ১০ থেকে ২০ টাকা করে বাড়ছে কেজিপ্রতি। বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিপ্রতি কই ২৬০ টাকা, সিলভার কার্প ১২০, ইলিশ ছোট ৫০০ থেকে ৫৫০, পাঙাশ ১৪০, মাগুর ১৪০, তেলাপিয়া ছোট ১৪০- ১৬০, কার্প ২০০, কাতল-রুই ২৮০ ও বোয়াল ৭০০ টাকা।

ছুটির দিনে মুরগির দোকানগুলোয় ভিড় থাকলেও দাম ছিল আগের মতোই চড়া। কেজিপ্রতি ব্রয়লার সাদা ২৩০ টাকা, লাল ২৮০ ও পাকিস্তানি কক ৩৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

দু-একটি ছাড়া সবজির বাজারে এই সপ্তাহে তেমন পরিবর্তন আসেনি। বাজারে কেজিপ্রতি বেগুন ৬০ টাকা, করলা ৮০, শিম ৪০-৬০, শসা ৪০, গাজর ৪০, টমেটো ৩০, মিষ্টিকুমড়া ৪০, ঢেঁড়স ৮০, কচুর লতি ৮০, শালগম ৩০, চিচিঙ্গা ৬০, মরিচ ১২০, লাউ প্রতিটি ৪০-৬০ এবং লেবুর হালি ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে টানা তিন সপ্তাহ ধরে অস্থির ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার এখন ২৪০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর হালিপ্রতি ডিমের দাম ৪৮-৫০ টাকা।

সেই উত্তাপ এখন ছড়িয়েছে মাছের বাজারেও। প্রকারভেদে সাধারণ চাষের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশি পদের (উš§ুক্ত জলাশয়ের) মাছগুলোর দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।

মধ্যবাড্ডা বাজারে কথা হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফজলুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের মতো হিসাব করে চলা মানুষ আর গরুর মাংস খেতে পারবে না। কম দামে ব্রয়লারও এখন কেনা যায় না। মাছের দামও বেড়েছে। আমরা এখন কী খাব?

তিনি বলেন, ইচ্ছা থাকলেও মাছ-মাংস সন্তানের মুখে দিতে পারছি না। হিসাবের বাইরে গিয়ে কিনলে অন্য খরচে টান পড়ছে। আমার জীবনে সব পণ্যের দাম একসঙ্গে এভাবে বেড়ে যাওয়া কখনও দেখিনি।

মধ্যবাড্ডা বাজারের মাংস বিক্রেতা সাদিকুল ইসলাম বলেন, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ছাগলের মাংসের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। মানুষ মাংস কিনছে কম। বিশেষ করে খাসির মাংসের ক্রেতা একদমই নেই।