শাহিদা আরবী: বিস্ময়কর মহাবিশ্বে যত গ্রহ-উপগ্রহের অস্তিত্ব মিলেছে, একমাত্র পৃথিবীতেই মেলে সবুজের দেখা। আর তাই হয়তো এই সবুজকে ঘিরেই আমাদের বেড়ে ওঠা কিংবা অস্তিত্বের বিকাশ এবং তারই ধারাবাহিকতায় সভ্যতা আজ এমন এক জায়গায় পৌঁছে গেছে, পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রান্তেই মানবসভ্যতার পদধ্বনি শোনা যায়। বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশুদ্ধ বাতাস, স্বচ্ছ ও নিরাপদ পানি, পর্যাপ্ত খাদ্য ও নিরাপদ বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের বাস্তবায়নস্বরূপ তৈরি হচ্ছে নগরায়ণ। কাজের সন্ধানে মানুষ হচ্ছে শহরমুখী। তবে বাস্তবতা হচ্ছে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আমাদের বাসস্থানকে আমরা প্রতিনিয়ত এমনই এক বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছি, যেখানে হয়তো নিজেদের অস্তিত্বের টিকিয়ে রাখার প্রশ্নই সবাইকে দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলে দেয়। গ্লোবাল ওয়ার্মিং (বৈশ্বিক উষ্ণায়ন) যেন হয়ে উঠেছে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং জলবায়ুর এই পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যেসব দেশ সব থেকে বেশি অরক্ষিত অবস্থায় আছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। তাই শহরকে বাসযোগ্য রাখতে কাবর্নমুক্ত শহর তৈরিই এখন মুখ্য নাগরিক দায়িত্ব হওয়া উচিত।
শহরের সব থেকে ব্যস্ত রাস্তাটাকেও থমকে দিয়েছিল কভিডের মতো মহামারি। চোখের সামনে পুরো পৃথিবী দেখল ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সাক্ষী হলো লাখ লাখ মৃত্যুর। তবে কভিডের এই বিপর্যয়কেও হার মানাতে পারে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা। তাই এই জলবায়ু পরিবর্তনের ধরন, কারণ এবং প্রভাব সম্পর্কে জানা সবারই প্রয়োজন। গড় তাপমাত্রা বাড়ছে, মেরুর বরফ গলছে, বন্যা, খরা, দাবানল আরও শক্তিশালী হচ্ছে। গত ১০ বছর ধরে আমাদের পৃথিবী ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হলেও আঠারো শতক থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ছাড়িয়ে গেছে অতীতের সব রেকর্ড। ফলে তৈরি হচ্ছে গ্রিসহাউস গ্যাস, যা ধরে রাখছে সূর্যের আলো এবং উত্তপ্ত হচ্ছে পৃথিবী। জাতিসংঘের বৈশ্বিক উষ্ণতাবিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেলের গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের গ্রহটি আগামী ১২ বছরের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধির চূড়ান্ত সীমা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে; যা প্রাক-শিল্পযুগের মাত্রার থেকেও বেশি। এতে আবহাওয়া পরিস্থিতি অস্বাভাবিক রূপ নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িয়ে দেবে কোটি মানুষের খাদ্য সংকটের ঝুঁকি। তাই তাপমাত্রার এই সীমা অতিক্রম এড়াতে প্রতিটি নাগরিকের উচিত সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্রুত, সুদূরপ্রসারী ও নজিরবিহীন পরিবর্তন আনা। যাতে করে পরবর্তী প্রজš§ একটি বাসযোগ্য শহর পায়, সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য। শুধু নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিলেই হবে না, যে শহরে আমাদের নিজেদের বসবাস, নিজের সুস্বাস্থ্য, প্রিয়জনের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে তাই নিজেকেই হতে হবে সজাগ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ুর এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী মূলত দুটি কারণ। এর মধ্যে মূল যে কারণটি ভূমিকা পালন করছে তা হচ্ছে মানবসৃষ্ট কারণ। যার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জীবাশ্ম যে জ্বালানিগুলো পোড়ানো হচ্ছে, তার ফলে .০৬ ডিগ্রি করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে; যা আমাদের সবার জন্যই হুমকিস্বরূপ। পাশাপাশি বিশাল এই জনসংখ্যার খাদ্যের জোগান দিতে গিয়ে প্রাকৃতিক সারের পরিবর্তে রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রতি ঝুঁকছে কৃষক; যা থেকেও বাড়ছে কার্বন। দূষিত হচ্ছে মাটি, পানি, বাতাস। বাংলাদেশের এই বিদ্যমান ধারায় বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং ঘটনাগুলোর ধারাপ্রবাহ এভাবেই চলতে থাকলে গবেষকদের ধারণা মতে, আগামী ১০০ বছরে প্রায় তিন কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হতে পারে; সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তায় আসতে পারে বড় ধরনের চাপ। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত এক নতুন রিপোর্ট বলছে, বিশ্বে কার্বন নির্গমন যেভাবে চলছে তা কমানো না গেলে এখন থেকে ৮০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের এক বড় অংশ সাগরের পানির নিচে চলে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি যতটা হবে ভেবেছিল বিজ্ঞানীরা, তাদের এক সতর্কবাণী বলছে পানির স্তর বা উচ্চতা আরও অনেক গুণ বাড়তে পারে। গ্রিনল্যান্ড এবং অ্যান্টার্কটিকায় জমা বরফ গলাকে এর কারণ হিসেবে মনে করছেন তারা। শুধু তা-ই নয়, এর ফলে ৮০ লাখ বর্গকিলোমিটার ভূমি সাগরের পানিতে তলিয়ে যাবে এবং যার মধ্যে থাকবে বাংলাদেশের এক বড় অংশ। কেননা, গবেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতের পৃথিবী হতে এখনকার চেয়ে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতর ও কার্বন নির্গমন এখনকার হারে চলতে থাকে তাহলে একুশশো সাল নাগাদ সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বাড়বে ৬২ থেকে ২৩৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত; যা তাদের ধারণার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। তবে আশার বাণী হচ্ছে, এমন পরিণতি এখনও এড়ানো যেতে পারে যদি আগামী কয়েক দশকে কার্বন নির্গমন বড় আকারে কমানো যায়।
কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধির ভয়াবহতা অনুধাবন করে শহরকে বাসযোগ্য করে তুলতে সবাইকে নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। নতুবা সময়ের স্রোতে গা ভাসালে কার্বনের বিষাক্ততা গ্রাস করবে পুরো শহর। প্রজšে§র সঠিক বেড়ে ওঠা নিশ্চিতে তাই প্রয়োজন সঠিক পদক্ষেপ; যা প্রকৃতিতে কমিয়ে আনতে পারে কার্বন। এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপের সূচনা হোক নিজের থেকেই। চলাচলের ক্ষেত্রে আমরা প্রায়ই ব্যক্তিগত গাড়ি এবং প্লেন বা উড়োজাহাজ ব্যবহার করি; যা কার্বন নিঃসরণের প্রধান উৎস। কারণ এসবে জ্বালানি হিসেবে যা ব্যবহার হয়, তা কার্বন নিঃসরণের প্রধান উৎস। এক্ষেত্রে গাড়ি কিংবা প্লেনের পরিবর্তে বৈদ্যুতিক বাহন, সাইকেল কিংবা ট্রেন ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার দূরের ব্যবসায়ী সফর বাতিল করে ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেমও চালু করা যেতে পারে। এতে একদিকে কমবে কার্বন নিঃসরণের হার, অন্যদিকে বাঁচবে মূল্যবান সময়। জীবনকে সহজ এবং কাজের সময় বাঁচাতে আমরা ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করছি। আর কাপড় শুকাতে ব্যবহার করছি মেশিনের টাম্বেল ড্রায়ার। হচ্ছে শক্তির অপচয়। এর থেকে বাঁচতে সূর্যের আলোকে কাজে লাগানো যেতে পারে। বাঁচবে শক্তির অপচয় এবং পরিবেশও থাকবে সুরক্ষিত। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, লাল মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবার উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন ঘটায়। সে ক্ষেত্রে সমাধান হিসেবে মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ কমিয়ে সবজি এবং সব রকমের ফলের ওপর নির্ভরতা বাড়ালে শরীরে পুষ্টি নিশ্চিতের পাশাপাশি পরিবেশের সুস্থতা নিশ্চিত করাও সম্ভব হবে। প্রতিটি জিনিস পুনর্ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কার্বন নিঃসরণের হার কিছুটা হলেও কমানো যাবে।
সুস্থ একটি প্রজন্মের সুস্থ বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে চাই সুস্থ সতেজ আর সবুজঘেরা পরিবেশ। শহুরে যান্ত্রিকতায় এখন চোখ আর সবজের দেখা পায় না। বাড়ছে দালনকোঠা, ধ্বংস হচ্ছে খেলার মাঠ, হারিয়ে যাচ্ছে সোনালী শৈশব। বিকল্প হিসেবে ছাদবাগান তৈরি করা যেতে পারে। প্রতিটি ছাদে নিজস্ব অর্থায়নে সামান্য কিছু গাছও পারে শিশুদের সবুজের ছোঁয়া দিতে, পারে কার্বনমুক্ত প্রকৃতি গড়তে। গৃহিণী কিংবা অবসর জীবনযাপনকারী যে কারও জন্য ছাদকৃষি হতে পারে দারুণ এক সুখের ক্ষেত্র। জীবন হয়ে উঠতে পারে ছন্দময় ও অর্থবহ। ছাদকৃষির সামান্য কিছু গাছ প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়ায় ভরিয়ে রাখতে পারে মানবহƒদয়, হতে পারে অক্সিজেনের উৎস আর কার্বন বিন্যাসের মাধ্যম। পাশাপাশি পারিবারিক পুষ্টি, সুস্বাদু ফল ও সবজির চাহিদা পূরণের বিষয়টি তো থাকছেই। ছাদকৃষির পরিসরটা যত ছোটই হোক না কেন, মনে রাখতে হবে তার সঙ্গে প্রতিদিনের নিত্য যোগাযোগটাই জরুরি বিষয়। ক্রমেই শহরের বুক চিরে যে পরিমাণ দালানকোঠা তৈরি হচ্ছে, তাতে খেলার মাঠ তো দূরের কথা, প্রাণ খুলে শ্বাস নেয়ার এক টুকরো সবুজ হয়তো আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। শহরের প্রতিটি ছাদে এক একটি ঝুলন্ত উদ্যান তৈরি হলে তা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি, এনে দেবে শহুরে যান্ত্রিকতায় এক টুকরো প্রশান্তি। নিশ্চিত করা যাবে পরবর্তী প্রজন্মের সবুজের মধ্যে বেড়ে ওঠা।
শতভাগ দূষণমুক্ত শহর গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। লোহিত সাগরের কূলে তৈরি করা হবে কার্বন নিঃসরণ মুক্ত এই বাণিজ্যিক শহর; যাতে বসবাসের সুযোগ পাবে প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ এবং ৪ লাখ মানুষ পাবে কর্মসংস্থান। অভূতপূর্ব এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি ডলার। ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নে তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে পর্যটন শিল্পের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সৌদি আরব এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে পুরো একটি অঞ্চলকে ‘দূষণমুক্ত’ শহর হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মো. বিন সালমান। তিনি ধারণা করছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ তাদের শহরই হবে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা শহর। দূষণমুক্ত এই শহরে চলবে না কোন গাড়ি এবং প্রতি ৫ মিনিট হাঁটলেই পাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় সব জিনিস এবং কেউ দূরে যেতে চাইলে ২০ মিনিট হেঁটে গাড়িতে উঠতে পারবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে চালানো হবে সবকিছু এবং তারা আশা করছেন তাদের প্রকল্প বাণিজ্যিক বিপ্লব ঘটাবে। সৌদি আরবের অভাবনীয় এই ‘দ্য লাইন’ প্রজেক্টের বাস্তবায়ন যদি ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও আমরা আমাদের দেশে ঘটাতে পারি, তবে কার্বনমুক্ত শহর গড়ার লক্ষ্যে আমরাও এগিয়ে যেতে পারি আরও একধাপ। এ ক্ষেত্রে আমাদের মূল্যবান সম্পদ ম্যানগ্রোভের সংরক্ষণের দিকেও আমরা নজর দিতে পারি। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভের সংরক্ষণের পাশাপাশি পুনরায় বৃক্ষরোপণ করলে পরিবেশকে কার্বনমুক্ত করার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের বিরুদ্ধে একটি প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবেও কাজ করবে।
২০২০ সালে কার্বন নিসঃরণ হয়, এমন জ্বালানি শক্তি ব্যবহার হ্রাসের মাধ্যমে, কার্বন নিঃসরণ কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ। আমাদের সচেতনতাই পারে এই কার্বন নিঃসরণের হারকে শতভাগ কমিয়ে আনতে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে শহরকেন্দ্রিক হাজারো কলকারখানা তাদের যাত্রা শুরু করছে উন্নয়নের লক্ষ্যে। সব জেনে বুঝেও যেন আমরা এমন এক পথে হাঁটছি, যে উন্নয়ন একদিন আমাদেরই অস্তিত্ব সংকটে ফেলবে। উন্নয়ন চলবে, তবে সেই সঙ্গে একটা সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে মানবসভ্যতার টিকে থাকাটাও সমান জরুরি। নতুবা এই উন্নয়নই একদিন কাল হয়ে দাঁড়াবে। ব্যবসায়ীদের অবশ্যই তাদের কর্মকাণ্ডে সচেতনতা আনতে হবে, যাতে করে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়। তথাকথিত ‘উন্নয়নের’ আশীর্বাদ যাতে তাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে না আসে সে লক্ষ্যে সচেতনতার বলয় তৈরি করতে হবে এখনই। আমাদের সচেতনতাই একদিন সৌদি আরবের মতো গল্পকথার ভবিষ্যৎ এক কার্বনমুক্ত নগরী তৈরিতে আমাদের পথ দেখাবে। এখন সময় এসেছে গতানুগতিক চিন্তা থেকে বের হয়ে এসে ভবিষ্যতের কথা ভাবা। কার্বনকে বিনাশ করে নতুন প্রজন্মের কাছে দিয়ে যেতে হবে একটি সুস্থ শহর, একটি সুস্থ বাংলাদেশ।
শিক্ষার্থী, ইংরেজি সাহিত্য বিভাগ
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়