গণমাধ্যমকে বিভ্রান্ত করছে তামাক কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক: তামাক কোম্পানির অযাচিত হস্তক্ষেপের ফলে আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন এবং বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। বিগত দিনগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন, আইন সংশোধন, বিধিমালা প্রণয়ন ও আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু সম্প্রতি তামাক কোম্পানিগুলো গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো গণমাধ্যমকেও এক ধরনের গোলক ধাঁধার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এতে করে অনেক সময় গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে, যা তামাক কোম্পানির পক্ষে যায়।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের উদ্যোগে গতকাল আয়োজিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে গণমাধ্যমের ভাবনা’ শীর্ষক অনলাইন টকশোতে বক্তারা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে অংশ নেন হলি টাইমস পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক শ্যামল কান্তি নাগ, দৈনিক শেয়ার বিজের সিনিয়র রিপোর্টার মো. মাসুম বিল্লাহ এবং দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার সাজিদা ইসলাম পারুল। ওয়ার্ক ফর এ বেটার ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য।

ওই অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সরকার এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্য তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু কমিয়ে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন। অন্যদিকে কোম্পানির উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যহানিকর পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং মুনাফা অর্জন। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসায় মুনাফা বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘমেয়াদি বাজার সৃষ্টি করতে চায়। ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে তামাক কোম্পানিগুলো আইন সংশোধন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং নীতিনির্ধারক ও গণমাধ্যমগুলোর কাছে অসত্য তথ্য প্রচার করছে।

বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ করা এবং লাইসেন্সিং ব্যবস্থার প্রচলন করা হলে তরুণদের অনেকাংশে ধূমপান থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে। তামাক কোম্পানিগুলোকে পরিবীক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা যাবে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম, ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকার বিধান এবং মারাত্মক ক্ষতিকর ভেপিং বা ইলেকট্রনিক সিগারেট নিষিদ্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অত্যন্ত যৌক্তিক। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আইন সংশোধন অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিগত সময়ে হাতেগোনা কয়েকটি তামাক কোম্পানি তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক নীতি প্রণয়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে, এখনও করছে। সুতরাং কোম্পানিগুলোর হস্তক্ষেপ প্রতিহত করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা, তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ করা, হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের তালিকা থেকে তামাক কোম্পানির নাম বাদ দেয়া জরুরি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০