নিজস্ব প্রতিবেদক: গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতালের অধীনে দেশে প্রথম ক্যানসার প্রতিরোধ বিভাগের যাত্রা শুরু হয়েছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অসমাপ্ত স্বপ্ন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্পের আওতায় এই বিভাগের উদ্বোধন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার ধানমন্ডি ৬ নম্বর সড়কের গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ভবনের ষষ্ঠ তলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র চ্যারিটেবল ট্রাস্টের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা। এতে মূল বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতালের প্রকল্প সমন্বয়কারী ও প্রিভেন্টিভ অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. এমএ হাই, বারডেমের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, নারীস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি ড. হালিদা হানুম আখতার, নারী অধিকার নেত্রী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি শিরীন হক, বিএসএমএমইউ’র গাইনি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক লতিফা শামসুদ্দিন, বিএসএমএমইউ’র ইউরো-অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ সালাম, বিএসএমএমইউ’র প্যালিয়েটিভ কেয়ার বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেজাম উদ্দিন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আফতাব উদ্দিন, ডা. আবু জামিল ফয়সাল, ডা. মো. শহিদুল্লাহ, নিপসমের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আব্দুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব আব্দুল হাকিম মজুমদার, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউর রহমান মিটন, নিরাপদ খাদ্য আন্দোলন কর্মী শওকত মাহমুদ, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক মসিহ্উদ্দিন শাকের। হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক বদরুল হক, ডা. ফারজানা আক্তার ও ডা. নিজামুল হক।
মূল বক্তব্য গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতালের প্রকল্প সমন্বয়কারী ও প্রিভেন্টিভ অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, তিনটি ধাপে পূর্ণাঙ্গ ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে তোলার পরিকল্পনা তুলে ধরেন। প্রথম ধাপে নগর হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসার বিদ্যমান সুবিধা (সপ্তম তলায় ব্র্যাকিথেরাপি ও কেমোথেরাপির ডে-কেয়ার সেন্টার, বিদ্যমান জনবল) আত্তীকরণ করে এর সঙ্গে ষষ্ঠ তলায় ক্যানসার ওপিডি ও ক্যানসার প্রতিরোধ বিভাগ যুক্ত করে ক্যানসার হাসপাতালের ইউনিট-১ গড়ে উঠবে একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে। ভর্তি রোগীর চিকিৎসা হবে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের আওতায়। ২০২৪ সালের মধ্যে এই ইউনিট ও নগর হাসপাতালের সমন্বয়ে কেবল বিকিরণ চিকিৎসার টেলিথেরাপি (লিনিয়ার এক্সিলারেটর) ব্যাতিরেকে ক্যানসারের সব সেবা চালু হবে।
ইউনিট -২ চালু হবে মিরপুর পল্লবীতে নির্মাণাধীন ১০তলা ভবনের চার-পাঁচটি ফ্লোর নিয়ে। ২০২৪ সালের মধ্যে এখানে ওপিডি, ক্যানসার স্ক্রিনিং ও দূর-দূরান্তের ক্যানসার রোগীদের স্বল্প খরচে থাকা-খাওয়ার সুবিধাসহ গণস্বাস্থ্য ক্যানসার নিবাস চালু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে ইনডোর, ডে-কেয়ার ও ওটি চালু করা হবে। একটি লিনিয়ার এক্সিলারেটর মেশিন বসানোর সম্ভব্যতা যাচাই করা হবে।
তৃতীয় ও শেষ ধাপে ২০২৭ সালের মধ্যে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে/অধিগ্রহণকৃত স্থানে চার-পাঁচটি রেডিওথেরাপি মেশিন, ওটি কমপ্লেক্স, কেমোথেরাপির জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। দূর-দূরান্তের রোগীদের স্বল্প খরচে থাকা-খাওয়ার জন্য ডরমিটরি থাকবে।