Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 10:44 pm

গতি ফিরেছে আর্থিক খাতের শেয়ারদরে

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক সপ্তাহের পতনের পরে ফের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে স্থান নিয়েছে বিমা খাতের শেয়ার। পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে আর্থিক খাতের প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারদর। এ সময়ে অন্যান্য খাতের শেয়ারদরে কিছুটা মিশ্র প্রবণতা দেখা দিলেও অধিকাংশের পতন হয়। কিন্তু মৌলভিত্তির শেয়ারে ভর করে এগিয়ে যায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামগ্রিক লেনদেন।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে এমন চিত্র। আলোচিত সময়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল মৌলভিত্তির খাত হিসেবে বিবেচিত বিমা, ব্যাংক, এনবিএফআইর শেয়ারে।

এর মধ্যে সর্বোচ্চ আগ্রহ দেখা গিয়েছে বিমা খাতে। সপ্তাহ শেষে শেয়ারদর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০টির ৯টিই বিমা খাতের। বিশেষ করে সাধারণ বিমা খাতে আগ্রহ বেশি দেখা গিয়েছে বিনিয়োগকারীদের। যার প্রভাব পড়ে ডিএসইর মোট লেনদেনেও। সপ্তাহ শেষে দেখা গেছে, মোট লেনদেনের ৪২ দশমিক চার শতাংশই ছিল বিমা খাতের।

তথ্য অনুযায়ী, ডিএসইর লেনদেনে মোট ৩৬৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে সপ্তাহ শেষে শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ১২৫টির। অপরদিকে শেয়ারদর কমে ১৮৩টির, অপরিবর্তিত থাকে ৫১টি ও লেনদেন হয়নি চারটির।

অধিকাংশ শেয়ারদরে পতন হওয়ার পরও বেড়েছে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিমাসহ আর্থিক খাতের শেয়ারদর মৌলভিত্তির হওয়ায় মূলধারার বিনিয়োগকারীরা এ খাতেই লেনদেন বেশি করেছে। এ খাতের শেয়ার হাতবদল বেশি হওয়ায় সামগ্রিকভাবে লেনদেন বৃদ্ধি পায় ডিএসইর। এজন্য বাজার মূলধন কিছুটা কমলেও সূচকের পতন হয়নি।

আলোচিত সময়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৬ শতাংশ। আলোচিত সময়ে পূর্ববর্তী সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে এক হাজার ১২৩ কোটি টাকা।

জানা গেছে, আলোচিত সময়ে সাধারণ বিমা খাতের শেয়ারদরে বিনিয়োগকারীরা ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ মুনাফা দেখতে পান পূর্বেও সপ্তাহের চেয়ে, যা খাত হিসেবে গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ। এছাড়া জীবন বিমা খাতে পাঁচ দশমিক ৯৪ শতাংশ, এনবিএফআইয়ে তিন দশমিক ২৩ শতাংশ ও ব্যাংক খাতে শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ মুনাফা দেখতে পান বিনিয়োগকারীরা। অবশ্য আর্থিক খাতের মধ্যে শুধু মিউচুয়াল ফান্ডে শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ লোকসান দেখতে পান বিনিয়োগকারীরা।

এছাড়া ওষুধ খাতে শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ, খাদ্যে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ মুনাফা দেখা গেছে। অপরদিকে বিনিয়োগকারীরা লোকসান দেখতে পেয়েছেন প্রকৌশল খাতে ছয় দশমিক ৬৫ শতাংশ, টেলিকমে তিন দশমিক শূন্য সাত শতাংশ ও জ্বালানি খাতে এক দশমিক ৩৫ শতাংশ।

একক কোম্পানি হিসেবে ডিএসইতে শেয়ার লেনদেনে শীর্ষ ১০টির প্রথম স্থানে উঠে আসে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া লেনদেন বেশি হয় বেক্সিমকো ফার্মা, রিপাবলিকে ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসেফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো, ব্র্যাক ব্যাংক, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লস এবং গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের।

একক কোম্পানি হিসেবে ডিএসইতে শেয়ারদর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০টির প্রথম স্থানে উঠে আসে গ্লোবাল ইন্সু্যুরেন্স। এছাড়া শীর্ষ ১০টিতে স্থান পাওয়া প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ৬০ দশমিক ১০ শতাংশ, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ৪২ দশমিক ৩২ শতাংশ, প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ৩৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ৩৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ৩৩ দশমিক ২৩ শতাংশ, পেনিনসুলা চিটাগংয়ের ২৭ দশমিক ১৭ শতাংশ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ২৬ শতাংশ, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং পিপলস ইন্স্যুরেন্সের ২৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ দাম বেড়েছে। অপরদিকে শেয়ারদর হারানোর শীর্ষে ছিল সাভার রিফ্যাক্টরিজ, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ।