Print Date & Time : 27 June 2025 Friday 8:40 pm

গত অর্থবছরে আদায় দুই হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা

সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল চট্টগ্রাম ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় করেছে দুই হাজার ৬৫৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে বিলকৃত টাকার পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৬২৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা, যা শতকরা হিসেবে আদায়ের হার দাঁড়ায় ১০১ দশমিক ১১ শতাংশ। তবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আদায়ের হার ছিল ১০০ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
এদিকে বিউবো বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল গত এক বছরে অবৈধ সংযোগ ও বকেয়া আদায়ের বিপরীতে মামলা করেছে এক হাজার ৭১টি। আর মামলা নিষ্পত্তি করেছে ৮৩৫টি।
বিউবো বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল চট্টগ্রাম সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরের শেষে বিউবো বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল চট্টগ্রামের মোট গ্রাহকসাংখ্যা ১০ লাখ ৯০২। এর আগের অর্থবছরে গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৯ লাখ তিন হাজার ৬৭১। এসব গ্রাহকের কাছ থেকে বিদায়ী অর্থবছরে বিলকৃত টাকা থেকে ২৯ কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে বিউবো বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলে। এ অর্থবছরে বিলকৃত টাকার পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৬২৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে দুই হাজার ৬৫৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অতিরিক্ত টাকাগুলো বিলকৃত টাকার বাইরে বকেয়া, সুদ ও জরিমানা থেকে এসেছে।
এদিকে বিদায়ী অর্থবছরে বকেয়ার পরিমাণও কমেছে ২৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা এ অঞ্চলে। এ অর্থবছরে বার্ষিক বিলসহ মোট বকেয়া আদায়ের পরিমাণ ছিল ৩৫৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, যা সময় হিসেবে তুলনা করলে দেড় মাসের বিলকৃত টাকার সমান। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বকেয়ার পরিমাণ ছিল ৩৮৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, যা প্রায় দুই মাসের বিলকৃত টাকার সমান ছিল।
অন্যদিকে বিগত বছরের তুলনায় সিস্টেম লস কমেছে শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম জোনে সিস্টেম লস ছিল আট দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর কালেকশন ইমপোর্ট রেশিও (সিআই রেশিও) ছিল ৯২ দশমিক ১৭ শতাংশ, যেক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অর্জিত সিস্টেম লস ও সিআই রেশিও ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও ৯১ দশমিক ৩১ শতাংশ।
তবে বকেয়া আদায়ের জন্য গত অর্থবছরে বিউবো বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ আদালত উত্তর ও দক্ষিণ এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত মিলে মামলা হয়েছে এক হাজার ৭১টি। এর মধ্যে বিদ্যুৎ আদালতে মামলা হয়েছে ৭৪৫টি আর ভ্রম্যমাণ আদালত মামলা করেছে ৩২৬টি। এর বিপরীতে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৩৫টির। জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মামলা হলেও পরের ছয় মাসে কোনো মামলা করতে হয়নি। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষে অনিষ্পন্ন মামলা আছে তিন হাজার ৭৬৬টি। এর মধ্যে বিদ্যুৎ আদালত উত্তরের এক হাজার ১৯৯টি ও বিদ্যুৎ আদালত দক্ষিণের রয়েছে দুই হাজার ৫৬৭টি।
বিউবো বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার প্রবির কুমার সেন শেয়ার বিজকে বলেন, ‘২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাণিজ্যিক পরিচালনসংক্রান্ত প্যারামিটারসগুলো অর্জন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এগিয়ে আছে। গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে (কালেকশন বিল রেশিও) আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সেখানে আমরা অর্জন করেছি ১০১ দশমিক ১১ শতাংশ। এছাড়া সিআই রেশিওর ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ দশমিক ৫৩ শতাংশ, সেখানে আমরা অর্জন করেছি ৯২ দশমিক ১৭ শতাংশ।
তিনি বলেন, বর্তমানে দক্ষিণ অঞ্চলে পল্লিবিদ্যুৎসহ বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৩-১৪শ মেগাওয়াট। এর মধ্যে পিডিবির চাহিদা রয়েছে ১১শ মেগাওয়াট আর পল্লিবিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে দুই থেকে আড়াইশ মেগাওয়াট। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৬টি স্টেশন মিলে বিদ্যুৎ জেনারেট করেছে ৯০০ মেগাওয়াট আর বাকিটা জাতীয় গ্রিড থেকে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এক হাজার ১০০ কোটি টাকার একটা প্রকল্প চলমান আছে। এছাড়া এই মাসের শেষের দিকে দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার আরেকটা প্রকল্প একনেকে ওঠার কথা আছে। এ দুটি প্রকল্প শেষ হলে দক্ষিণ অঞ্চলে বিদ্যুতের আর সমস্যা হবে না।